১৪ কোম্পানির দুধ বিক্রি বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশিত: ২:৪২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০১৯

সিসাসহ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকায় সরকারের মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসটিআইয়ের অনুমোদিত ১৪ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন ও বিতরণ এবং কেনা বা খাওয়া ৫ সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বাজারে থাকা এসব দুধ দ্রুত সরিয়ে নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুধে অ্যান্টিবায়োটিক ও ক্ষতিকর উপাদান থাকায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত রুল জারি করেছেন আদালত।

এই ১৪ কোম্পানি হচ্ছে আফতাব মিল্ক অ্যান্ড মিল্ক প্রোডাক্ট লিমিটেড (আফতাব মিল্ক), আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড (ফার্ম ফ্র্রেশ মিল্ক), আমেরিকান ডেইরি লিমিটেড, বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্ক ভিটা), বারো আউলিয়া ডেইরি মিল্ক অ্যান্ড ফুডস লিমিটেড (ডেইরি ফ্রেশ), ব্র্যাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রজেক্ট (আড়ং মিল্ক), ডেনিশ ডেইরি ফার্ম লিমিটেড, ইছামতি ডেইরি ফার্ম অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস (পিওরা), ইগলু ডেইরি লিমিটেড (ইগলু), প্রাণ ডেইরি লিমিটেড (প্রাণ মিল্ক), উত্তরবঙ্গ ডেইরি লিমিটেড, শিলাইদহ ডেইরি (আল্ট্রা মিল্ক), পূর্ববাংলা ডেইরি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ ও তানিয়া ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস। যদিও প্রসিদ্ধ এই ১৪ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধে আশঙ্কাজনক বা ক্ষতিকর কোনো কিছুই পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল বিএসটিআই।

অন্যদিকে আদালতের নির্দেশ অনুসারে এসব কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষা করে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), আইসিডিডিআরবি এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ল্যাবরেটরি। তাদের রিপোর্টে সবকটি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া যায়। এই রিপোর্ট আদালতে উপস্থাপন করা হলে তা পর্যালোচনা করে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেন।
আদালতে বিএসটিআইয়ের পক্ষে ব্যারিস্টার সরকার এমআর হাসান ও রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক। এর আগে গত ১৪ জুলাই ১৪ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষা করে চারটি ল্যাবকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। যাতে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক, সিসা, ডিটারজেন্ট, এসিডিটি, ফরমালিন ও অন্যান্য ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে বলা হয়। এই আদেশের পর গত ২৩ জুলাই চারটি ল্যাবের মধ্যে তিনটি তাদের প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করে। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির প্রতিবেদন এখনও জমা দেওয়া হয়নি।

এ ছাড়া নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের তৈরি করা (বিসিএসআইআর ও পরমাণু শক্তি কমিশনের ল্যাবে পরীক্ষা করা) ১১ কোম্পানির দুধ পরীক্ষার প্রতিবেদনও আদালতে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে উপস্থাপন করা হয় ঢাবি অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের প্রতিবেদনও।

উল্লেখ্য, পাস্তুরিত দুধ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিসার্চ, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) গবেষণা প্রতিবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাজারে থাকা ৭৫ শতাংশ পাস্তুরিত দুধই অনিরাপদ, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি। এই প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়।

Comments