ফারুক হত্যা : সাঈদীসহ ১০৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন

প্রকাশিত: ৩:৩৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০১৯

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল দখল নিয়ে ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার হুকুমের আসামি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ১০৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) আদালতে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ৬০ আসামির উপস্থিতিতে রাজশাহী অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এনায়েত কবির সরকারের আদালত ১০৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন।

এ সময় আদালতে এই মামলার আরও ৪৭ জন আসামি অনুপস্থিত ছিলেন। প্রথমে এ মামলায় ১১০ জনকে আসামি করা হলেও আসামিদের মধ্যে থেকে তিনজন মারা যাওয়ায় বাকি ১০৭ জনের বিচার শুরু হলো।

এ দিকে সাঈদীকে দেখতে আদালত প্রাঙ্গণ ও এর আশপাশে ভিড় করেন স্থানীয়রা। আদালত অঙ্গনে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। রাজশাহী জামায়াত নেতারা ছাড়াও সাধারণ মানুষও ভিড় করেন আদালতের আশপাশে।

রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন ওই আদালতের এপিপি শিরাজী শওকত সালেহীন। আর আসামিপক্ষে মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্যানেল এ মামলা লড়ছেন।

রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি সিরাজী শওকত সালেহী এলেন বলেন, ২০১০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফারুককে নির্মম ভাবে হত্যা করে ড্রেনে ফেলা রাখা হয়। এর আগেরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শিবির কর্মীদের সাথে মিটিং করে ও বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনে লাশ ফেলার আদেশ দেন। এরই ফল ফারুক হত্যা। তাই তার বিরুদ্ধে ২০৩ ধারায় হত্যা মামলা সহ ১০৯ ধারায় প্ররোচণার মামলা হয়েছে। এই মামলায় সাঈদীসহ মোট ১১০জনকে আসামী করে আদালতে ২০১২ সালে চার্জশিট দেয় পুলিশ। আসামীদের মধ্যে সম্প্রতি ৩জন মারা যাওয়ায় তাদের নাম বাদ দিয়ে এখন মোট ১০৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছে আদলত।

এদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবি আবু মোহাম্মদ সেলীম বলেন, বাদী পক্ষ ৩৫জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেছিল। এছাড়া ২০ জনকে অজ্ঞাত উল্লেখ করা হয়েছিল। পরে পুলিশ মামলায় অভিযুক্তের সংখ্যা বাড়িয়ে ১১০জন করে। এটি পুরোপুটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পণোদিত মামলা। এই মালায় সাঈদীকে হুকুমের আসামী করা হয়েছে। অথচ তিনি ঘটনার দিন রাজশাহীতে ছিলেন না। তিনি আরো দাবি করেন এই মামলায় কোন আসামীর জবানবন্দী নেই।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল দখল নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা।

ওই সংঘর্ষে শিবিরের ক্যাডাররা ছাত্রলীগ কর্মী ফারুককে হত্যা করে লাশ শাহ মখদুম হলের পেছনের ম্যানহলে ফেলে দেয়। ওই রাতে ছাত্রলীগের আরও তিন কর্মীর হাত-পায়ের রগও কেটে দেয় হামলাকারীরা।

পরদিন এ নিয়ে নগরীর মতিহার থানায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ৩৫ শিবির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেক শিবির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।

পরে ওই মামলার হুকুমের আসামি করা হয় জামায়াতের শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ বেশ কয়েকজনকে। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নিজামী ও মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

Comments