মাছ চাষে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে গবেষণায় জোর দেন এমপি আফিল

প্রকাশিত: ৯:২৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ২১, ২০১৯

বিল্লাল হোসেন,যশোর প্রতিনিধি:  যশোর-১ শার্শা আসনের এমপি আলহাজ শেখ আফিল উদ্দিন বলেছেন, মাছ চাষিরা বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত জাতগুলো সঠিকভাবে চাষ করে বাংলাদেশের মৎস্য খাতকে বিশ্বের দরবারে সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠা করেছেন। মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। মিষ্টি পানির মাছ আহরণ ও চাষের এই সাফল্য এসেছে অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে। প্রাকৃতিক উৎস থেকে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিজ্ঞানীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

তিনি বলেন, এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে গুরুত্বের পর মৎস্য খাতকেও অতি গুরুত্ব দিয়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এগুলো বাস্তবায়নের পর বাংলাদেশ মৎস্য সম্পদ উৎপাদনে আরো বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করবে।

রোববার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের আয়োজনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এমপি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টিপাত নেই বললেই চলে। ফলে মাছ চাষের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু সেই পানি শতভাগ বিশুদ্ধ নয়। ফলে মাছ চাষে নানা ধরনের বিঘ্নতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, মাছ চাষে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে গবেষণার উপর জোর দিতে হবে। দেশীয় উপাদানসমূহ ও কাঁচামালের সহায়তায় মাছের খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো ও নতুন জাত উদ্ভাবনে গবেষণার কোন বিকল্প নেই।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলরের নেতৃত্বে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সুনামের সাথে এগিয়ে চলেছে। শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় চেষ্টা করছেন। মনে রাখবেন সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নানা ধরণের বাধার সম্মুর্খীন হতে হয়। এসব পরোয়া না করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ সত্যের জয় সব সময়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন।  তিনি বলেন, আমাদের ঘরের পাশে রত্ম আছেন। সেই রত্ম হলেন এমপি শেখ আলহাজ আফিল উদ্দিন। এতো ব্যস্ততার মাঝেও তিনি মৎস্য চাষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন আরো বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং জেনোমিক রিসার্চই আগামী বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে। সুতরাং এ দুটি জিনিসকে যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি, তাহলে বাংলাদেশকে যে পর্যায়ে দেখতে চাই, সেই পর্যায়ে চলে যাবে। দেশকে বাঁচাতে হলে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, যশোর শহরের একটি কালো ছায়া আমার পিছু ছাড়ছেনা। যবিপ্রবিকে ধবংস করতে তারা নানা চক্রান্ত করে চলেছেন। ওই হায়েনাদের কবল থেকে যবিপ্রবিকে রক্ষা করতে কিনা সন্দেহ।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আনিছুর রহমান, জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন কিশোর মজুমদার, ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আমিনুর রহমান ও অধ্যাপক ড. সুব্রত মন্ডল।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন যশোর জেলা মৎস্য হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ¦ ফিরোজ খান, ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী রেজোয়ান বিশ্বাস প্রমুখ।

সঞ্চালনা করেন ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবা ইসলাম ও টুটুল সাহা।

এদিকে আলোচনা সভার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার বের করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের পূর্ব পাশে নবনির্মিত বিশ্বমানের হ্যাচারি অ্যান্ড ওয়েট ল্যাব উদ্বোধন করেন যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ শেখ আফিল উদ্দীন।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা পুকুরে বিভিন্ন জাতের পোনা অবমুক্তকরণ করা হয়।

Comments