মিন্নির বিষয়ে বরগুনার নারী সংগঠগুলোর ভূমিকা রহস্যজনক

প্রকাশিত: ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২১, ২০১৯

বরগুনায় শাহ নেওয়াজ শরিফ রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও গ্রেফতারকৃত স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে পুলিশ নির্যাতন করছে এমন অভিযোগ করেছেন তার বাবা।

স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের ভয়ে মিন্নিকে আইনি সহায়তা দিচ্ছেন না কোন আইনজীবী এমন অভিযোগও করা হয়েছে।

অন্যদিকে নারী অধিকারের কথা বলে বরগুনার এমন কোন নারী সংগঠনও মিন্নির জন্য দৃশ্যমান কোন কর্মসূচী নেয়নি।

আইনি সহায়তা প্রদান করে এমন সংগঠনগুলো কেন মিন্নির জন্য কথা বলছে না এ রহস্যই এখন জেলার সাধারণ মানুষের কাছে মূখ্য হয়ে উঠেছে।

গত ২৬ জুন স্বামী নেওয়াজ শরিফ রিফাতের উপরে প্রকাশ্য দিবালোকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হলে স্ত্রী মিন্নি হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।

এ ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্বামীকে বাঁচাতে নিজের সাহসী ভূমিকার কারণে প্রসংশা কুড়িয়েছিলেন মিন্নি। পরে ঐ হত্যাকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ উঠলে গত ১৬ জুলাই রাতে মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতারের পরে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়ে মিন্নির কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করেছে পুলিশ এমন অভিযোগ করেন তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন।

এদিকে নারী অধিকার এবং নির্যাতিত নারীদের প্রাপ্য অধিকার আদায়ে জনসচেতনতা তৈরি করতে রাজপথে আন্দোলন করে এমন নারী সংগঠনগুলোর র্নিলিপ্ত থাকার বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

বরগুনা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল বলেন, ‘সারাদেশে দেখি নির্যাতিত নারীদের অধিকার নিয়ে নারী সংগঠন বিভিন্ন সময় সামাজিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। কিন্তু মিন্নির বিষয়ে বরগুনায় এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন কর্মসূচী দেখিনি।’

সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য শামসউদ্দীন খান বলেন, ‘মিন্নির বিষয়টি স্থানীয় নারী সংগঠনগুলোর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখা উচিত ছিল। সামাজিকভাবে জনসচেতনতা তৈরি করে প্রশাসনের সঙ্গে দেখা করে মিন্নির বাবার অভিযোগ খতিয়ে দেখা উচিত ছিল।’

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘নারী সংগঠনগুলো শুধু অনুষ্ঠানিকতার জন্যই ফোন দেয় কিন্তু তাদের আন্তরিকতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।’

মিন্নির বিষয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের জন্য প্রেক্ষাপট ভিন্নভাবে তৈরী হয়েছে এমনটি জানিয়ে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি’র বরগুনা জেলা কমিটির সভানেত্রী মাহফুজা বেগম বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশের সকল নারী নিরাপদে থাকবে কিন্তু মিন্নির মানবাধিকার লংঘন হয়েছে। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় ভিন্ন একটা প্রেক্ষাপট আছে বলে কিছু করা যায়নি।’

বিষয়টিতে অনেকটা দায় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে এমনটি বলছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বরগুনা জেলা কমিটির সভাপতি নাজমা বেগম। তিনি দোষিদের শাস্তি দাবি করেন এবং মামলাটি তদন্তাধীন উল্লেখ করে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Comments