বিয়েবাড়ির মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১ নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ২:২৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০১৯ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় বিয়েবাড়ির মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১ জনে দাঁড়িয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলেই ৯ জন এবং মঙ্গলবার ভোর ৩টার পর সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন, জিআরপি থানা পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর আগে সন্ধ্যায় উল্লাপাড়ার সলপ রেলস্টেশনের আধা কিলোমিটার উত্তরে অরক্ষিত একটি লেভেল ক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মাইক্রোবাসটি একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বর-কনে নিয়ে ফিরছিল। এদিকে দুর্ঘটনা তদন্তে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের মো. আলতাব হোসেনের ছেলে ও বর রাজন শেখ (৩৫), উল্লাপাড়া চরঘাটিনা গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুল গফুরের মেয়ে ও কনে সুমাইয়া খাতুন (২১), কান্দাপাড়া উত্তরপাড়ার মো. শামিম হোসেনের ছেলে আলিফ হোসেন (১১), উল্লাপাড়া চরঘাটিনা গুচ্ছগ্রামে আশরাফ আলীর স্ত্রী মমতা খাতুন (৩৫), জেলা সদরের সর্দারপাড়া গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ (৩২), সয়ধানগড়া মধ্যপাড়ার সুরত আলীর ছেলে আহাদ আলী (১৯), রামগাতী গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে আব্দুস সামাদ (৪৫) ও তার ছেলে শাকিল আহম্মেদ (১৯), সয়ধানগাড়া (মিলন মোড়) মহল্লার মৃত একরামুল হকের ছেলে মাইক্রোবাসচালক নুরে আলম স্বাধীন (৪০), রায়গঞ্জের পাঙ্গাসী ইউনিয়নের কৃষ্ণদিয়া গ্রামের আলম শেখের ছেলে খোকন শেখ (২২) এবং কালিয়া হরিপুর চুনিয়াহাটির মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে ভাষান শেখ (৬৫)। এদের মধ্যে ভাষান শেখ সদর হাসপাতালে আনার পথে মারা যান। এলাকাবাসী, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশসূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী পদ্মা ট্রেনটি দ্রুতগতিতে সলপ রেলস্টেশন হয়ে যাচ্ছিল। ঠিক এ সময় রেলস্টেশনের আধা কিলোমিটার উত্তরে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং দিয়ে মাইক্রোবাসটি রেললাইন পার হচ্ছিল। রেললাইন পার হওয়ার আগেই ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ঠেলে সাহিকোলা গ্রামের কাছে নিয়ে যায়। এ সময় গ্রামের লোকজন ট্রেনটিকে অবরোধ করে রাখে। পুলিশ গিয়ে এক ঘণ্টা পর ট্রেনটি গন্তব্যস্থলে পৌঁছার ব্যবস্থা করে। উল্লাপাড়া থানার ওসি দেয়ান কউসিক আহমেদ ও উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনমাস্টার নাজির হোসেন জানান, সিরাজগঞ্জ উপজেলার কালিয়াকান্দাপাড়া গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে রাজন আহমেদ দুপুরে উল্লাপাড়ার চরঘাটিনা গুচ্ছগ্রামের আবদুল গফুর শেখের মেয়ে সুমাইয়াকে বিয়ে করতে আসেন। বিয়ে শেষে নববধূকে নিয়ে রাজনসহ ১২ জন মাইক্রোবাসে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে তারা দুর্ঘটনার শিকার হন। ঘটনাস্থলেই ৯ জন নিহত হন। কয়েকজনের দেহ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে। তাদের চেনার উপায় নেই। দুর্ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিস, থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা উদ্ধারকাজে এগিয়ে আসেন। তারা আহত তিনজনকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠান। সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে নেয়ার পথে একজন ও হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়। Comments SHARES সারাদেশ বিষয়: বিয়েবাড়ি