যুবককে কুপিয়ে যখন অভিযুক্তরাই মামলার বাদী

প্রকাশিত: ৮:১৬ অপরাহ্ণ, জুন ১০, ২০১৯

ভৈরব প্রতিনিধি: ভৈরবে মোবারক মিয়া নামে এক যুবককে কুপিয়ে গুরুতর জখমের পর অভিযুক্ত ব্যক্তিরাই প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ভৈরব থানায় মামলা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগের পর রহস্যজনক কারণে পুলিশ ঘটনার দিনই কথিত বাদী মাসুমের প্রতিপক্ষ কালা মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটকের দুইদিন পর আজ সোমবার পুলিশ কালা মিয়াকে কোর্টে চালান দেয়।

এদিকে পায়ে গুরুতর জখমের পর পায়ে ৩৩টি সেলাই নিয়ে মোবারক শহরের স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কথিত বাদীর আপন ভাই মাহফুজ গত শনিবার দুপুরে পূর্বশত্রু“তার জেরে মোবারককে দা দিয়ে কুপিয়েছিল। এ ঘটনাটি ঘটেছে ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর গ্রামে।

ভূক্তভোগী ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানাযায়, মামলার বাদী উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের গোইল্লার বাড়ির মাসুমের বাবা আলাউদ্দিন ও চাচা কালা মিয়ার পারিবারিক জায়গা সংক্রান্ত ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ঝামেলা চলছিল।

এ নিয়ে গত শনিবার দুপক্ষের মাঝে সংঘর্ষ বাধে। একই বাড়ির নিরপেক্ষ ব্যক্তি মোবারক হোসেন এগিয়ে এসে এ সংঘর্ষে ঘটনায় জড়িত দু’পক্ষের লোকজনকে ফেরাতে গেলে আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে ও বাদী মাসুমের ভাই মাহফুজ মিয়া ক্ষুব্ধ হয়ে হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে মোবারক মিয়াকে কুপিয়ে আহত করেন। পরে স্বজনরা মুমূর্ষু অবস্থায় মোবারককে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

অপরদিকে আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে মাসুম মিয়ার ভাই মাহফুজ নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করেছে সেই আহত মোবারককে নিজের ভাই দাবি করে এবং মাসুম নিজেও আহত হয়েছে বলে উল্লেখ করে ভৈরব থানায় অভিযোগ দেয়।

বাদী মাসুম পুলিশের কাছে দেয়া অভিযোগে তথ্য গোপন করে তাদের প্রতিপক্ষ নিরীহ কালা মিয়া ও তাঁর লোকজনকে আসামি করলে ঘটনার দিনই পুলিশ কালা মিয়াকে আটক করে নিয়ে আসে। স্থানীয় নেতাদের অনুরোধে ভৈরব থানা পুলিশ আটককৃতকে দুইদিন থানা হাজতে রাখার পর অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে আজ সোমবার কিশোরগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

মামলার তদন্তকারী অফিসার ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক আমজাদ হোসেন জানান, মামলার বাদী মাসুম মিয়া ঘটনার দিন পার্শ্ববতী শিমুলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান যোবায়ের আলম দানিছকে সাথে নিয়ে থানায় এসে ওসি স্যারের কাছে অভিযোগ দেন।

মাসুম নিজে আহত ও মোবারককে তাঁর ভাই দাবি করে ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে অভিযোগে উল্লেখ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দিন রাতে কালা মিয়াকে আটক করা হয়।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার কিছু মাতাব্বর বিষয়টি সালিশ দরবারের মাধ্যমে মীমাংসা করবে বলে জানালে আটককৃত কালা মিয়াকে চালান দেয়া হয়নি।

পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা বিষয়টি সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানানোর পর আজ সোমবার কালা মিয়াকে কিশোরগঞ্জ জেল হাজতে চালান করা হয়। তিনি আরো জানান, পরে জানতে পারেন আহত মোবারক মাসুমের ভাই ছিলনা।

এবিষয়ে কেউ পুলিশের কাছে অভিযোগ করেনি। কালা মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এজাহার দিলে সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

এমএম/

Comments