পদ্মা সেতু নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার ৮

প্রকাশিত: ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০১৯

ডেস্ক: পদ্মা সেতুর জন্য ‘রক্ত ও মাথা’ প্রয়োজন বলে ফেইসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এর মধ্যে নড়াইল, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা ও রাজবাড়ী থেকে মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

আর চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ একই কারণে গ্রেপ্তার করেছে তিনজনকে। ছেলেধরা সন্দেহে পেটানোর সময় মানসিক ভারসাম্যহীন দুই ব্যক্তি ও এক মাদ্রাসা ছাত্রকে পুলিশ উদ্ধার করেছে।

র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ভূঁঞা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচ জেলায় তাদের সদস্যরা ফেইসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেন।

এরা হলেন- নড়াইলের শহিদুল ইসলাম (২৫), চট্টগ্রামের আরমান হোসেন (২০), মৌলভীবাজারের মো. ফারুক (৫০), কুমিল্লার হায়াতুন নবী (৩১) এবং রাজবাড়ীর এক কিশোর।

তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে বলেন র‌্যাব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান।

ওই পাঁচজনের মধ্যে চট্টগ্রামের আরমানকে শুক্রবার ভোর রাতে আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন তৈলারদ্বীপ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই এলাকায় পোলট্রি ফার্মের ব্যবসা করেন।

র‌্যাব-৭ চাঁন্দগাও ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বলেন, গত ৮ থেকে ১১ জুলাই আরমান তার ফেইসবুক পেইজে ‘পদ্মা সেতুতে রক্তের প্রয়োজন’ বলে গুজব রটিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়ে আসছিলেন।

“পদ্মা সেতুর ছবির পাশাপাশি রক্ত ও কাটা মাথার ছবি পোস্ট করে লিখেছেন- এই মাত্র পাওয়া খবর- গুজব নয় সত্যি, রক্ত চায় পদ্মা সেতু, ঘর ছাড়া শতাধিক পরিবার, রক্তের অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর কাজ, চারজন গায়েব- আতঙ্কে গ্রাম ছাড়া সাধারণ মানুষ, চুরির সময় হাতেনাতে ধরা…।”

পদ্মা সেতু নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই এ ধরনের প্রচার চলায় গত মঙ্গলবার একটি বিচ্ঝপ্তি দেয় সরকারের সেতু বিভাগ।

পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে ‘মানুষের মাথা লাগবে’- এমন গুজব ও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানোর পাশাপাশি এ ধরনের অপপ্রচার চালালে আইনে শাস্তির বিধান থাকার বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া হয় সেখানে।

এদিকে শুক্রবার দুপুরে চাঁদপুর মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে ওসি মো. নাসিম উদ্দিন পদ্মা সেতু নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান।

এরা হলেন- সদর উপজেলার ইসলামপুর গাছতলা এলাকার সেলিম গাজীর ছেলে সাজ্জাদ গাজী (২২), ফরিদগঞ্জ কাসারা এলাকার আব্দুল মান্নান ভূইয়ার ছেলে সায়েম ভূইয়া (২১), বাগড়া বাজার এলাকার মোখলেছ হাওলাদারের ছেলে আবু খালেক রতন (২৩)।

ওসি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগাদী গাছতলা এলাকা এবং রাতে শহরের কালীবাড়ি এলাকা থেকে তারা তিনজনকে উদ্ধার করেছেন, যাদের ছেলেধরা সন্দেহে পেটাচ্ছিল জনতা।

ওই তিনজনের মধ্যে দুজন মানসিক ভারসাম্যহীন এবং মাদ্রাসা পড়ুয়া এক তরুণ রয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কোনো ধরনের গুজব বা অপপ্রচারে কান না দিয়ে সতর্ক থাকতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানান ওসি মো. নাসিম উদ্দিন।

Comments