গোবিন্দগঞ্জের সাবেক এমপি কালামকে সাঁওতাল মামলায় ফাঁসাতে চক্রান্ত চলছে

প্রকাশিত: ৬:৩৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৯

রেজুয়ান খান রিকন, গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: রাজনীতিতে জয় পরাজয় উত্থান পতন থাকবে এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে স্পর্শকাতর মামলায় ফাঁসাতে বহুমাত্রিক চক্রান্ত চলবে এটা নূন্যতম শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে লড়াই হবে মাঠে ময়দানে প্রাসাদ চক্রান্তের মাঝে নয়।

বলছি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সিংহপুরুষ খ্যাত সাবেক সাংসদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের কথা। খাঁটি তৃণমূল থেকে ধীরে ধীরে শিখরে উঠে আসা এই মানুষটিকে সাঁওতাল মামলায় ফাঁসাতে স্থানীয় ও জাতীয় চক্রান্ত করা হচ্ছে। গোবিন্দগঞ্জের চলতি দশকের সবচেয়ে স্পর্শকাতর মামলা সাঁওতাল হত্যা ও বসতবাড়ীতে অগ্নিসংযোগের মত স্পর্শকাতর মামলায় তাকে ফাঁসাতে উঠে পড়ে লেগেছে স্থানীয় ও জাতীয় একটি কুচক্রী মহল। তাদের প্রধান টার্গেট যেভাবেই হোক সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ কে এই মামলায় ফাঁসাতেই হবে। যেন ফাঁসাতে পারলেই কেল্লাফতে।

সেজন্য সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ কে মামলায় ফাঁসানোর জন্য চলছে মিছিল মিটিং মানববন্ধন সহ আইনি প্রক্রিয়া। এই চক্রান্তের অংশ হিসেবে চলছে বিপুল অর্থলগ্নি। স্পর্শকাতর এই মামলায় সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ কে ফাঁসাতে যে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি গুলো একের পর এক পালন করা হচ্ছে তার কাঠামো, পরিকল্পনা ও অর্থ ব্যয় দেখলে সহজেই অনুমিত হয় এই সত্য। বিশেষ কোন শক্তির ইন্ধন ছাড়া দিনমজুর ক্ষূদ্র নৃগোষ্ঠী সাঁওতালদের পক্ষে নিয়মিত এতো অর্থ ব্যয় করা প্রায় অসম্ভব। তাকে হয়রানীর উদ্দেশ্যে বৃহৎ কোন গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে অর্থ সহায়তা করা যে হচ্ছে যা বুঝতে কোন বিশারদ হতে হবে না।

বর্তমান নীতিহীন রাজনীতিতে জনসমর্থন লাভের আশায় রাজনৈতিক নেতারা বাছবিচার না করেই সবধরনের আয়োজনে উপস্থিত থাকেন। সেটা পাবলিক টয়লেট উদ্ধোধণ হোক কিংবা পাড়ার চড়ুইভাতি। সেই ধারায় তৎকালীন সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ সাঁওতালদের নিয়মতান্ত্রিক দাবীর প্রতি সহমত প্রকাশ করে তাদেও সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। সেই সাথে একান্ত আলাপচারিতায় সাঁওতালদের সহযোগিতার আশ্বাসও প্রদান করেন। এটা বর্তমান রাজনীতিবিদের সহজাত প্রবণতা। সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদও এই প্রবণতা থেকে দূরে ছিলেন না। কিন্তু ২০১৬ সালের ৩০ জুন সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবসের বিকালে কিছু বাম ঘরোনার জাতীয় নেতার উৎসাহে ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ১১ দিনের ছুটির প্রাক্কালে সাঁওতালরা সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারে দখল অভিযান পরিচালনা করে। এই দীর্ঘ ছুটির সময়ে তারা রংপুর চিনিকলের একমাত্র বাণিজ্যিক খামার সাহেবগঞ্জ বাগদা খামারের প্রায় নয়শত একর ভূমি দখল করে ঝুপড়ি ঘর স্থাপন করে।

দখলকৃত জায়গায় সাঁওতাল ও তাদের সহযোগিতারা প্রায় রাষ্ট্রের কর্তৃত্বহীন অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে। ওই জায়গায় সর্বসাধারণের যাতায়াতের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। পুলিশকে মারধর ও তাদের শর্টগান ছিনতাই সহ খামারে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে তারা। এই দখলের সাথে সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের কোন সংযোগ বা যোগসূত্র ছিলো না। তিনি স্থানীয় প্রশাসন কে সাথে নিয়ে দখল শুরুর পরের দিন সাঁওতালদের খামারের ভূমি দখল না করতে নিরুৎসাহিত করেন। পরবর্তিতে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর সকালে চিনিকল কর্তৃপক্ষ পুলিশের সহযোগিতায় কাঁটা মোড়ে আখ রোপণ করতে গেছে পুলিশের উপর সাঁওতাল ও তাদের সহযোগীরা হামলা করে। এতে নয় পুলিশ সদস্য তীরবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হওয়া সহ মোট ১৫ জন আহত হয়। ওই দিন বিকালে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক নির্দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও বিজিবি সদস্য খামারের জমি দখল মুক্ত করে। প্রশাসনিক নির্দেশে সাহেবগঞ্জ বাগদা ইক্ষু খামারের জমি দখল মুক্ত করা হলেও অহেতুক সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে দোষারোপ করা হচ্ছে।

স্থানীয় ও জাতীয় কুচক্রী মহলের পৃষ্ঠপোষকতায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার অন্যতম জনপ্রিয় কর্মীবান্ধব নেতা সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ কে নিয়ে চলছে নীলনকশা। কথিত সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার কমিটির প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়ে যেভাবেই সাবেক এমপি কালামকে মামলায় ফাঁসানো। সর্বোচ্চ প্রশাসনিক নির্দেশের দায় চাঁপানো হচ্ছে তাঁর উপর। দেখে যেন মনে হচ্ছে গোবিন্দগঞ্জের রাজনীতির ফ্যাক্টর সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ কে দমাতে পারলেই লাভবান হবে অনেকেই।

Comments