রেলক্রসিংয়ে ভাড়াটে সিগন্যালম্যান নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৬:২১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০১৯ নিউজ ডেস্ক শারীরিক প্রতিবন্ধী আবদুল কাদের ট্রেন এলেই পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে যান রেলক্রসিংয়ে। খুঁড়িয়ে হেটে সিগন্যালের দুই পাশের ব্যারিয়ার নামান তিনি। এমন দৃশ্য দেখে যে কেউ মনে করবেন তিনি এই রেলক্রসিংয়ের সিগন্যালম্যান। বাস্তবে তিনি ভাড়াটে হিসেবে কাজ করে দিচ্ছেন। এমন অনিয়ম চলছে সিরাজগঞ্জের ঈশ্বরদী-ঢাকা রেলপথের বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে মুলিবাড়ী রেলক্রসিংয়ে। এ ক্রসিংয়ে- হিরামন দাস, মোজাম্মেল হক ও আশরাফ উদ্দিন নামে ৩ জন সিগন্যালম্যান থাকলেও দায়িত্ব পালন করেন না কেউ। প্রতিবন্ধী আবদুল কাদেরকে দৈনিক ১০০ থেকে ১৫০টার বিনিময়ে রেলক্রসিংয়ে নিযুক্ত করেছেন তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, মুলিবাড়ী রেলক্রসিংয়ের দায়িত্বরত তিনজন সিগন্যালম্যান প্রায়ই কর্মস্থলে থাকেন না। মুলিবাড়ী গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী আবদুল কাদেরকে সিগন্যালের দায়িত্বে রেখে প্রায়ই ডিউটি ফাঁকি দিচ্ছেন সিগন্যালম্যানরা। টাকার বিনিময়ে দিন-রাত যে কোনো সময় আবদুল কাদের সিগন্যালম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। আবদুল কাদের বলেন, হিরামন দাস অসুস্থ হওয়ায় তার পরিবর্তে দায়িত্ব পালন করছি। কেউ না থাকলে তার পরিবর্তে আমিই দায়িত্ব পালন করে দেই। বিনিময়ে তারা প্রতিদিনের জন্য আমাকে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দেয়। সিগন্যালের দায়িত্বে থাকা হিরামন দাস বলেন, আমি হার্টের রোগী। মাঝে মধ্যে অসুস্থ হলে তখন আমি কাদেরকে দায়িত্ব দেই। আর মাত্র চার বছর চাকরি আছে। তবে শুধু আমি একা নই, অন্য সহকর্মীরাও কাদেরের ওপর নির্ভর করেন। সিরাজগঞ্জ জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন মজুমদার বলেন, মুলিবাড়ী রেলক্রসিংয়ে প্রায়ই প্রাণহানি ঘটছে। পথচারী ও অজ্ঞাত পরিচয়ের লোকজন সেখানে ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বা ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাচ্ছেন। এ জন্য দায়িত্বরত সিগন্যালম্যানদের আরও বেশি তৎপর হওয়া প্রয়োজন। আর তা না করে যদি তারা কাজে ফাঁকি দেন, তাহলে বিষয়টি একবারেই অনৈতিক। পশ্চিমাঞ্চলের রেল বিভাগ, পাকশীর সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম দৈনিক অধিকারকে বলেন, রেলক্রসিংয়ের সিগন্যালে থাকা কর্মচারীদের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে বলেও জানান তিনি। প্রসঙ্গত, জেলার ঈশ্বরদী-ঢাকা রেলপথের রক্ষিত ও অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বা ট্রেনে কাটা পড়ে বারবার প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। গত ১৫ জুলাই ঈশ্বরদী-ঢাকা রেলপথের সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার সলপ স্টেশনের পাশে ট্রেনের ইঞ্জিনের ধাক্কায় বিয়ের মাইক্রোবাসে থাকা বর-কনেসহ ১১ জন যাত্রী নিহত হন। এর আগে ঝাঔল ওভারব্রিজের কাছে শাহবাজপুরে গরুবোঝাই নসিমন ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ৪ গরু ব্যবসায়ী নিহত হন। Comments SHARES জাতীয় বিষয়: