নড়াইলে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের ৮৩ তম জন্মবার্ষিকী পালিত

প্রকাশিত: ৫:৪২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯

নড়াইল প্রতিনিধি: নানা কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডীবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা (বর্তমান নাম নূর মোহাম্মদনগর ) গ্রামে এবং বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল কোরআন খানি, র‌্যালী, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শনী, স্মৃতিসৌধে পুষ্প স্তবক অর্পণ, গার্ড অব অনার এবং স্মৃতি জাদুঘর মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল।

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ট্রাষ্ট ও নড়াইল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন কর্মসূচি ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা।

চন্ডীবরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ট্রাষ্টের সদস্য সচিব মো: আজিজুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো: জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মনিরুজ্জামান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা সেলিম, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের পুত্র এসএম মোস্তফা কামাল, মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এসএ মতিন ও সাইফুর রহমান হিলু, নড়াইল প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ।

এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যাসহ ক্লাবের সকল সদস্যবৃন্দসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডীবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা (বর্তমান নাম নূর মোহাম্মদনগর ) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৯ সালের ১৪ মার্চ তিনি তৎকালীন ইপিআর-এ (পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলস, বর্তমানে বিজিবি) যোগদান করেন। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। এরপর তিনি ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান । ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে তিনি যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮নং সেক্টরে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন।

১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে পাকবাহিনীর ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হন তিনি। আহত হবার পর পিছু না হটে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ নূর মোহাম্মদ আশংকাজনক অবস্থায়ও নিজের জীবনের কথা না ভেবে যুদ্ধ চালিয়ে যান এবং গুলি চালাতে চালাতে সামনের দিকে অগ্রসর হন। এক সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। শত্রুরা তাকে বেয়নেট দিয়ে বিকৃত করে চোখ দুটি উপড়ে ফেলে । পরবর্তীতে একটি ঝাড়ের মধ্য থেকে লাশ উদ্ধার করে যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। এ বীরের সম্মানার্থে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ চত্বরে ৬২ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ নির্মাণ করা হয়েছে।

/আইকে

Comments