শেখ হাসিনা বাঙ্গালীর অহংকার: যবিপ্রবিতে শিক্ষা উপমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৭, ২০১৯

বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি: শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জ্ঞান চর্চার রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। তার সুফল মানুষ পাচ্ছে। তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই ধারায় রাজনীতি করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঙ্গালীর জন্য অহংকার।

নওফেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের ভবিষ্যত উন্নয়ন চিন্তা করে বিভিন্ন গবেষণা করেন। তিনি আগামী ১০০ বছরের ডেল্টা প্ল্যান নিয়ে এগোচ্ছেন। গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বরাবরই উদার। ১৯৯৬ সালে তিনি সর্বপ্রথম ক্ষমতায় এসে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বাজেট ঘোষণা করেছিলেন। এখনো শিক্ষাখাতের দিকে বেশি সুনজর রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু অ্যাকাডেমিক ভবনের গ্যালারিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাইস চ্যান্সেলর প্ররফসর ড. আনোয়ার হোসেন।

গবেষণা ও বিজ্ঞানকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন উল্লেখ্য করে উপমন্ত্রী বলেন, একসময় এই দেশের রাজনীতিকরা পেরিসে গিয়ে ধর্ণা দিতেন সাহায্য সহযোগীতার আশায়। কিন্তু আজকের পেক্ষাপট সম্পূর্ণ উল্টো। সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন বিস্ময়।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ( যবিপ্রবি )বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্টের (বিএসএম) ৩২তম বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  বক্তব্যের শেষে উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বিএসএম ৩২তম বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী আরো বলেছেন, জ্ঞান বিজ্ঞানের ভাষায় আমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছি। কেননা জ্ঞান বিজ্ঞানে যারা উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করছেন তাদের অধিকাংশ পাঠ্যবই ইংরেজী ভাষায় লেখা। ইংরেজী ভাষা পড়ে গবেষকের সংখ্যা বাড়লেও দক্ষ গবেষক তৈরি হচ্ছে কম। তাই বুঝে শুনে গবেষণা অর্জন করতে বাঙ্গালীদের জন্য বিজ্ঞানের পাঠ্যবই বাংলা ভাষায় অনুবাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। তাহলে বিজ্ঞানের ধারণাগুলো সকলে সহজে বুঝতে পারবে। বাংলাদেশের দক্ষ গবেষক বাড়বে। আমরা দক্ষ বিজ্ঞানী, দক্ষ প্রকৌশলী, দক্ষ ডাক্তার আরো সৃষ্টি করতে পারবো।

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যারা পড়াশোনা করছেন, এতে তারা আরো বেশি উপকৃত হবে। আপনারা একটু উদ্যোগী হয়ে বিশেষ সেল গঠন করে এটা করতে পারেন। দেশের সব বিজ্ঞান গবেষকদের এ বিষয়ে বিশেষ দায়িত্বের সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোরও দায়িত্ব রয়েছে। আপনারা প্রয়াস নিন, দায়িত্ব নিন। আমরা সহযোগিতা করবো।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্টের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ফারহানা ইয়াসমিন।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের ফেলো মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ড. এ এস এম মতিউর রহমান ও ‘শান্তিস্বরূপ ভাতনগর’ পুরস্কারপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতের হায়দারাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ।

অনুষ্ঠানে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, চেয়ারম্যান, যশোরের বিশিষ্টজনেরাসহ উপস্থিত ছিলেন এবং দেশি-বিদেশি প্রয় আড়াই শতাধিক আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষক, গবেষক, বিজ্ঞানী এবং পিএইচডি-এমফিল ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

এ সম্মেলনে অণুজীব বিজ্ঞানের গবেষণা ছাড়াও সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, জলবায়ু পরিবর্তন, জৈব তথ্য-প্রযুক্তির উপর গবেষণার বিষয়ে ১৬১টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। ‘ট্রেন্ডস ইন মাইক্রোবায়োলজি ফর সাসটেইনবল অ্যাগ্রোইকোলজিক্যাল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এই সম্মেলন বিএসএম এবং যবিপ্রবির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে আমন্ত্রিত অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। বিভিন্ন এলাকার গবেষকদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি মিলন মেলায় পরিণত হয়।

/আরএ

Comments