খুলনায় ইটের আঘাতে মসজিদের খাদেমকে হত্যা

প্রকাশিত: ১২:০০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০১৯

নাসির উদ্দিন, খুলনা প্রতিনিধিঃ খুলনা মহানগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজার এলাকায় মাসুদ গাজী (৪০) নামে এক মসজিদের খাদেমকে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।

শনিবার (১৯ জানুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে রাত ৯টার দিকে স্থানীয় বখাটেরা দু’দফায় তার ওপর হামলা করলে তিনি গুরুতর জখম হন।

নিহত মাসুদ গাজী মিস্ত্রিপাড়া বাজার মসজিদের খাদেম হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একই সঙ্গে রং মিস্ত্রি ও বিদ্যুতের কাজও করতেন। তিনি মহানগরীর পূর্ব বানিয়া খামার লোহারগেট নবম গলির বাসিন্দা মুনসুর রহমান গাজীর পুত্র।

রোববার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে ময়না তদন্ত শেষে খুমেক হাসপাতালের মর্গ থেকে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খাদেম মাসুদ গাজী শনিবার রাতে এশার নামাজ আদায় করে মিস্ত্রীপাড়া বাজার মসজিদ থেকে বের হয়ে দধি কিনে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সড়কের পাশে বসে থাকা নাসির ও সোহানসহ ১০-১৫জন বখাটের সঙ্গে কোন একটি বিষয় নিয়ে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বখাটেরা তাকে মারধর করে।

তিনি আহত হয়ে বাসায় ফিরে যান। বাসায় গিয়ে ঘটনা বলার পর ভাই ইয়াসিন গাজীকে সঙ্গে নিয়ে পুনরায় ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় বখাটেরা স্থানীয় স্কুল গলির মুখে নিয়ে তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে এবং মুখ ও বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। তার ভাই ইয়াসিন গাজী ঠেকাতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। এক পর্যায় মাসুদ গাজী অচেতন হয়ে পড়লে বখাটেরা পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দেড়টার দিকে তিনি মারা যান। রোববার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

নিহতের ভাগ্নে মিজানুর রহমান বিপ্লব জানান, হামলার সময় নাসির ও সোহানসহ ১০-১৫জন ছিল। এরা মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবির বলেন, ‘মাসুদ গাজী দধি কিনে বাসায় ফেরার পথে কয়েকজন যুবক ডেকে বলে কি নিয়ে যাচ্ছিস, দধি বলে জবাব দিলে বলে শুধু দধি কেন, মিষ্টি কই? এ সময় তাদের দিকে মাসুদ গাজীর বাঁকানো দৃষ্টিতে তাকানো নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। এভাবে কথা কাটাকাটির পর তিনি বাসায় চলে যান।

পরে মাসুদ গাজী তার দুই ভাইকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে বখাটেরা ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

খুলনা সদর থানার উপ পরিদর্শক সুব্রত বলেন, আমরা সুরতহাল রিপোর্টের সময়ে তার মাথায় ৩টি আঘাতের চিহ্ন পাই।

/আইকে

Comments