জৈন্তাপুরে উচ্ছেদ অভিযানে অগ্নি সংযোগে পুড়ে ছাই ১২টি ঘরবাড়ি ও ফসল, প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি

প্রকাশিত: ১১:৪৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৯
বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে

জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি: জৈন্তাপুরে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্যাট ও পুলিশের উপস্থিতিতে বাগান কর্তৃপক্ষ দ্বারা বাউরীটিলায় ১২টি ঘরে অগ্নি সংযোগ, ফসল হানি ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জানান ভূমিহীন ৪২ পরিবারের সদস্যরা।

এলাকাবাসী জানান- ভূমি বন্দোবস্তের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে কয়েক দফা লিখিত আবেদন আবেদন করি। এছাড়া পূর্বে বাগান কর্তৃপক্ষের দায়ের করা জি.আর ২৭/২০১৬, এবং জি.আর ৩৯/১৫ দুটি মামলার আদালত ভূমিহীন পরিবারের পক্ষে রায় প্রদান করে। সম্প্রতি তাদের হয়রানি করতে উপজেলা নির্বাহী বরাবরে বাগান কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোটি তদন্ত ছাড়াই উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্যাট মুনতাসির হাসান পলাশ ও জৈন্তাপুর মডেল থানার পুলিশের উপস্থিতিতে বসত ঘরে অগ্নি সংযোগ ও ফসলহানির ঘটনা ঘটায়।

এলাকাবাসী সূত্রে যানাযায়- স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময় হতে জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের কামরাঙ্গীখেল দক্ষিন, নয়াখেল উত্তর ও পূর্ব, ভিত্তিখেল উত্তর এর ভুমিহীন বাসিন্ধরা জৈন্তাপুর উপজেলার দক্ষিণ কামরাঙ্গীখেল মৌজার ৫৫নং জেএলস্থিত বর্তমান জরিপী ছাপা ১/১নং খতিয়ানের পাক জরিপি হালের ২৭১নং দাগের বর্তমান জরিপি ছাপা ৫৪৫নং দাগ এবং ২৭৯নং দাগের বর্তমান জরিপি ছাপা ৫৪৯নং দাগ মোট ২৩.১৯ একর ভুমি ভোগ দখল করে বিভিন্ন প্রজাতির কৃষি ফসলাদি ফলাইয়া পরিবার পরিজন নিয়া বসবাস করে আসছে। বিগত কয়েক যুগ হতে তাদের দখলিয় ভূমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদন করেছেন।

পুড়ছে ফসল

এদিকে এম.আহমদ টি এন্ড ল্যান্ড কোম্পানী এই ভূমি বন্দোবস্থ না নিয়েই জোর পূর্বক দখলের অপচেষ্টা চালায়। অপরদিকে ২০১৬ সনের ২৪শে ডিসেম্বর প্রশাসনের উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভূমির ভূল ব্যাখ্যা উপস্থাপন করে উচ্ছেদের নামে সৃজিত ফল বাগান বাড়ীঘর, বৃক্ষরাজী ধ্বংস করে। এ সময় বাউরীটিলার বাসিন্ধাদের প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

সরকারের নিকট হতে বাগান কর্তৃপক্ষ কোন অবস্থায় বর্তমান জরিপি ৫৪৫ এবং ৫৪৯ নং দাগের কোন বন্দোবস্থ নাই কিংবা কোন কাগজপত্র কিংবা তাদের দখল দেখাতে পারেনি। বর্তমানে একই পন্থায় গতকাল ৪ ফেব্রুয়ারী দুপুর সাড়ে ১২টায় আমাদের ১২ঘরে অগ্নি সংযোগ এবং ফসলাধিতে অগ্নি সংযোগ করে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করেছে বলে অভিযোগ করেন বাউরী টিলার ৪২টি পরিবার।

এ বিষয়ে জানতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্যাট মুনতাসির হাসান পলাশ বলেন- বাগান কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং সরকারি নিয়ম মেনে উচ্ছেদ করা হয়েছে। অগ্নি সংযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি অগ্নি সংযোগের সত্যাতা স্বীকার করে বলেন উচ্ছেদের সময় বাগানের লোকজন আমার সাথে ছিল। আমি কিছু বলার আগেই আমার সম্মুখেই বাগানের লোকজন বসত বাড়ীতে অগ্নি সংযোগ করে এবং ফসলাদী কেটে ধ্ববংস করে।

ম্যাজিস্টেট ও পুলিশের উপস্থিতিতেই ফসলে অগ্নিসংযোগ করা হয়

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌরীন করিম বলেন- উচ্ছেদের সময় অগ্নি সংযোগ করার কারন আমি বলতে পারব না। উচ্ছেদের নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্যাট তা ভাল বলতে পারবেন। আমি এবিষয়ে কমেন্ট না করাই উত্তম।

/আরএ

Comments