যশোরে বাসের সুপারভাইজারকে ট্রাকের নিচে ফেলে হত্যার অভিযোগ

প্রকাশিত: ৮:১৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০১৯

বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি: যশোরের নওয়াপাড়ায় পরিবহন সুপারভাইজার আকাশ মাদবরকে (৩২) পিটিয়ে চলন্ত ট্রাকের নিচে ফেলে হত্যার অভিযোগে উঠেছে। শুক্রবার দুপুরে যশোর-খুলনা মহাসড়কে নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানা সংলগ্ন মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সামনে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহত আকাশ শরীয়তপুর জেলার পালং থানার ডোমসার গ্রামের আদু মাদবরের ছেলে। তিনি ফেম পরিবহনের শরিয়াতপুর -বেনাপোল রুটের বাসের সুপারভাইজর ছিলেন।

ঘটনার পর থেকে যশোর-খুলনা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। অভয়নগর থানায় হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।

ফেম পরিবহন (শরিয়তপুর-ব ১১-০০০২) এর চালক ছাত্তার জানান, শুক্রবার সকালে শরিয়তপুর থেকে যাত্রী নিয়ে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। দুপুরে নওয়াপাড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সামনে যানজট দেখে তার সুপারভাইজার শরীয়তপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য (পরিচয়পত্র নং-৭২৭) আকাশ মাদবর বাস থেকে হেলপারকে সাথে নিয়ে নেমে পড়েন। এরপর তিনি শুধু দেখেছেন সুপারভাইজারকে পিটিয়ে চলন্ত ট্রাকের নিচে ফেলে দিতে। কথাগুলো বলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শী আহত চালকের সহকারী (হেলপার) পারভেজ জানান, সুপারভাইজার আকাশ যানজট নিরসনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাক সরাতে চেষ্টা করেন। ট্রাকের হেলপার ও চালক তাদের গাড়ি সরাতে রাজি না হলে দুইজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এসময় পাশে দাড়িয়ে থাকা অভয়নগর ট্রান্সপোর্ট নামের ৪টি ট্রাকের চালক, তাদের সহকারী ও স্থানীয় লোকজন সুপারভাইজারকে মারপিট শুরু করে। একপর্যায়ে তারা আকাশকে মারতে মারতে চলন্ত তেলবাহী একটি ট্রাকের নিচে ফেলে দেয়। পরে পুলিশ এসে সড়কে পড়ে থাকা আকাশের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

অভয়নগর থানার এসআই জিয়াউর রহমান বলেন, ফেম পরিবহনের সুপারভাইজার আকাশ মাদবরকে পিটিয়ে চলন্ত ট্রাকের নিচে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। প্রাথমিক তদন্তে হত্যাকান্ড বলে মনে হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এবং হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন। হামলাকারীদের আটকের চেষ্টা চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নির্মম এ হত্যাকান্ডের বিচার হওয়া উচিৎ। বিনাকারণে একজন পরিবহন সুপারভাইজারকে পিটিয়ে ট্রাকের নিচে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের সাথে অভয়নগর ট্রান্সপোর্টের ৪টি ট্রাক (যশোর-ট ১১- ৪৭১১, যশোর-ট ১১- ৩৯৪৯, যশোর-ট ১১- ৩৯৩২ ও যশোর-ট ১১- ৪৬০২) এর চালক, হেলপার ও স্থানীয় কয়েকজন শ্রমিক সরাসরি জড়িত। তাদেরকে আটক করলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

/আরএ

Comments