যশোর

প্রেমিক যুগলকে আটকে রাখার জেরে যুবক খুন

প্রকাশিত: ১০:০০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৯

বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি: যশোরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে মামুন হোসেন (২৮) নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরিফ হোসেন (২৬) ও শেফালী বেগম (৪২)।

শনিবার বিকেলে শহরতলীর শেখহাটি ভাটার জোড়াপুকুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। প্রেমিক যুগলকে আটকে রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত বলে জানা গেছে। হতাহতদের উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আনার পর সেখানেও আরেক দফা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এদিকে, আহত শেফালীর ভাই বাবলাকে হাসপাতাল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে।

তিনি সদর উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। নিহত মামুন ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের মৃত আব্দুর রউফের ছেলে। আহত আরিফ শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়া এলাকার বজলু খলিফার ছেলে। তিনি এমএম কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। শেফালী বেগম শেখহাটি এলাকার হারুন শেখের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এদিন বিকেলে বাপ্পা নামে এক যুবক তার প্রেমিকাকে নিয়ে শেখহাটি এলাকার ঘুরতে যায়। এসময় শেফালীর ছেলে হৃদয়, ফয়সালসহ ৪/৫ জন দুর্বৃত্ত প্রেমিক যুগলকে আটকে রাখে। বিষয়টি তিনি মোবাইল ফোনে জানতে পেরে বাপ্পা পক্ষের কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে যান। সেখানে পৌছালে হৃদয়, তার ভাই সাগর, ফয়সালদের সাথে তাদের কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। সে সময় শেফালী বেগম ঠেকাতে গেলে তিনি ছুরিকাঘাতে জখম হন। এরপর হৃদয় ও ফয়সালের নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা মামুন ও আরিফকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। দুর্বৃত্তরা স্থান ত্যাগ করার পর আহত আরিফ মোবাইল ফোনে তার পরিচিতদের ঘটনাটি জানান।

পৌনে ৬টার দিকে এলাকার লোকজন শেখহাটি জোড়াপুকুর এলাকায় গিয়ে মামুন ও আরিফকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনেন। দুর্বত্ত সাগরের মা শেফালীকেও আনা হয় হাসপাতালে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কল্লোল কুমার সাহা জানিয়েছেন, হাসপাতালে আানার আগেই মামুন মারা যান। এলাপাতাড়ি ছুরিকাঘাতের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা চিকিৎসকের। সার্জারী ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সহকারি রেজিস্ট্রার ডা. মনিরুজ্জামান লড জানিয়েছেন, আহত দুইজনের মধ্যে আরিফের অবস্থা আশংকাজনক।

নিহতের ভাই আতিক জানিয়েছেন, চার ভাই এক বোনের মধ্যে মামুন সবার বড়। তার জেসটাওয়ারে একটি মোবাইল ফোনের দোকান ছিল। বর্তমানে সেটি ভাড়া দেয়া। হঠাৎ করে জানতে পারি বড় ভাই ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছেন। হাসপাতালে এসে মর্গে ভাইয়ের লাশ দেখতে পাই।

আহত আরিফের মা নাসরিন বেগম জানিয়েছেন, আরিফ এমএম কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। কারা তাকে কেন মারলো তা তিনি জানেন না। কি জন্য শেখহাটি গিয়েছিল তাও তিনি বলতে পারেন না।

হামলাকারী দুর্বত্ত সাগরের মা আহত শেফালীকে হাসপাতালে নেয়ার পর নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তারা েশফালীকে মারতে উদ্যত হয়। কিন্তু সেখান থাকা পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে। এ বিষয়ে কোতয়ালি থানা ওসি অপূর্ব হাসান জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যার কিছু সময় আগে শেখহাটি ভাটার পুকুর নামক স্থানে একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় একজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় দুইজনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। আসামিদের আটকের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

/সিএইচ

Comments