গুঁড়ো দুধ কিনতে বাঁধ্য করা হচ্ছে যশোরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালে

প্রকাশিত: ৯:৩১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০১৯

বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি: যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে গুঁড়ো দুধ বাণিজ্য। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রের বাইরে রোগীর স্বজনদের হাতে সেবিকারা নিজেদের ইচ্ছামতো গুঁড়ো দুধের প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দিচ্ছে। ভর্তি হওয়া যে কোনো রোগীকে গুঁড়ো দুধ কিনতে বাঁধ্য করা হচ্ছে।

হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড, লেবার ওয়ার্ড, গাইনী ওয়ার্ড, পুরুষ ও মহিলা পেইং ওয়ার্ডে দুধের নাম লেখা স্লিপ ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে সব চেয়ে বেশি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক রোগীর মুখে খাবার খাওয়ার ক্ষমতা থাকলেও রেহাই নেই।

দুধ তাদের খেতেই হবে। কোম্পানি ভেদে প্রতি কৌটা দুধের দাম নেন দোকানিরা চারশত টাকা থেকে সাড়ে ছয়শত টাকা পর্যন্ত। সেবিকাদের চাপাচাপিতে অকারণে স্বজনদের দুধ কেনা বাবদ বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। একাধিক রোগীর স্বজন জানিয়েছেন, তাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে দুধের স্লিপ দেয়াসহ নানা প্রতারণা করা হয়। অনেক সময় তারা বুঝেও কোনো প্রতিবাদ করেন না রোগীর চিকিৎসা সেবার স্বার্থে।

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের একজন সিনিয়র চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গুঁড়া দুধের স্লিপ দেয়ার বিষয়টি তার নজরেও এসেছে। তিনি একদিন নিষেধও করেছেন সব রোগীকে দুধ কেনার স্লিপ না দেয়ার জন্য। কিন্তু সেবিকারা শুনছেন না। যেসব রোগী মুখে খাবার খেতে পারে না তরল খাদ্য হিসেবে তাদের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়। তরল খাদ্যের বিষয়টি ব্যবস্থাপত্রে নোট থাকে। নিজেদের ইচ্ছামত যদি কোনো সেবিকা রোগীর স্বজনদের দুধ কিনতে বাঁধ্য করেন এটা অবশ্যই অনিয়ম।

রোগীর স্বজন পারভিনা খাতুন, বিজলী খাতুন, আবুল কালাম, রমজান আলী জানান, গুঁড়া দুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ওয়ার্ডে গিয়ে সেবিকাদের পাশে বসে থাকেন। তারাই নিজেদের কোম্পানির দুধের নাম লেখা ছোট কাগজ সেবিকাদের কাছে দিয়ে যান। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটুর সাথে।

তিনি জানান, চিকিৎসকের ব্যবস্থার বাইরে সেবিকারা গুঁড়া দুধ কেনার জন্য রোগীর স্বজনদের হাতে স্লিপ ধরিয়ে দেয়ার বিষয়টি অবশ্যই অনিয়ম ও দুঃখজনক। বিষয়টি তার জানা ছিলো না। গুঁড়া দুধ বাণিজ্য বন্ধে কার্যকরী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

/সিএইচ

Comments