বিধবা ও তার সন্তানদের সম্পতি আত্মসাতে মিথ্যা অভিযোগে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

প্রকাশিত: ৫:৫২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক: দিনাজপুরের ফুলবাড়ি পল্লীতে বিধবা গৃহবধু ও তার সন্তানদের সম্পতি হাতিযে নিতে ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে মিথ্যা পরকিয়ায় অভিযোগে গাছের সঙ্গে বেধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে ফুলবাড়ি উপজেলার পুটকিয়া ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মৃত্য আশরাফুল ইসলাম আবুলের বাড়িতে খবর পেয়ে ফুলবাড়ি থানার ইনচার্জ (ওসি) শেখ নাসিম হাবিব পুলিশ পাঠিয়ে নির্যাতনের শিকার রেশমা বেগম (২৮) কে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ১৪ আসামি সহ অগ্গাত জনকে আসামি করে একটি মামলা রেকড হয়েছে যার মামলা নম্বর ০৪ তাং ০২-০৪-২০১৯ ইং।

জানা গেছে প্রতিবেশি আব্দুর রশিদ জানান

গৃহবধু রেশমা বেগমের স্বামী আশরাফুল ইসলাম ব্রেন ক্যন্সারে আক্রান্ত হয়ে অকাল মৃত্যর পর রেশমা প্রতিবেশি জাহেদকে বিবাহ করে। এর তিন মাস পর জাহেদকে তালাক দিয়ে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে পূর্বের স্বামীর বাড়িতে বসবাস করে। এদিকে মৃত্য আশরাফুলের বড় ভাইু নজরুল ইসলাম রেশমা বেগম ও এতিম ছেলে- মেয়ে দুটির সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে এবং তাদেরকে বসবভিটা থেকে উৎচ্ছেদ করতে নানা ষড়যন্ত্র আটতে থাকে।

তারই অংশ হিসেবে গত সোমবার নজরুল তার দলবল ও জাহেদ সহ প্রাচীর টপকিয়ে গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে চোর ঢুকেছে বলে চিৎকার করতে থাকে।

এ ব্যাপারে রেশমা বেগমের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে মোছাঃ মাশতুরা আফরিন আখি জানায়, ঐ রাতে মা সহ ভাই বোন ঘুমিয়ে ছিলাম রাত ১ টার দিকে বাড়ির আঙ্গিনায় লোকজনের চোর চোর চিৎকার শুনতে পাই আঙ্গিনায় থাকা বিদেশি গাভী চুরি করতে এসেছে ভেবে বারান্দার গ্রিলের তালা খোলা মাত্রই কিছু বুঝে ওঠার আগই আমার বড় আব্বু নজরুল ইসামের নির্দেশে আলাউদ্দিন, শরিফুল, শাহারা বানু, মাহমুদ, জালাল, সাদ্দাম সহ অনেকে ঘরে ঢুকে আম্মুর চুলের ঝুটি ধরে টেনে হেচড়ে আঙ্গিনায় বের করে নারকেল গাছের সঙ্ঘে বেধে মারপিট শুরু করে এবং বলতে থাকে যতক্ষন জমির দলিল গুলো দিবে না মার বন্ধ হবে না।

এ সময় এক মাত্র ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ রাফি ইসলাম সহ মেয়ে আখি মনি মাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাদের কে মার পিট করে ঘরের ভিতর আটকে রাখা হয়। সারা রাত নারকেল গাছের সঙ্ঘে বেধে রেখে যে যার মত মারপিট করার পর গ্রাম বাসিকে দেখানোর জন্য বাড়ির বাইরের আম গাছের সঙ্গে প্রাক্তন স্বামী জাহেদ ও রেশমমাকে বেধে পুনরায় মারপিট করা হয়। সেই সঙ্গে প্রচার করা হয় পরকীয়ার কারণে তাকে মার ধর করা হচ্ছে।

রেশমার বড় বোন আফরুজা বেগম বলেন, মৃত্য স্বামীর বসতবাড়ি সহ জমিজমা থেকে দুটি এতিম সন্তানদের তাড়িয়ে দিয়ে সম্পদ আত্বসাতের জন্য তার বোনকে মিথ্যা অভিযোগে গাছে বেধে মার ধর করা হয়েছে।

থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে গৃহ বধু রেশমাকে আমগাছে বেধে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে । থানার ওসি শেখ নাসিম হাবিব বলেন, বিষয়টি জানার পর গৃহ বধুকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। নির্যাতনের শিকার গৃহ বধু রেশমা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

ইউপি চেয়ারম্যন মাওলানা নাবিকউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর সকালে গিয়ে গাছে বেঁধে রাখা গৃহবধুর বাধন খুলে দিয়েছি।

অভিযোগ উঠেছে মামলার এজাহার লেখার সময় কেীশলে প্রকৃত অনেক অপরাধীর নাম অন্তভূর্ক্ত করতে দেওয়া হয়নি। বাদী রেশমা বেগম জানান, সভ্য সমাজে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে নজরূল গংরা আমাকে ও আমার অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক সন্তানদের অমানবিক নির্যাতন করেছে যাতে আমরা তাদের অত্যাচারে বসত ভিটা ছেড়ে চলে যাই।

/আরএ

Comments