চকবাজার অগ্নিকাণ্ডের দায় এড়িয়ে যাওয়া যাবে না: হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯

একুশে ডেস্ক: চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা বলা যাবে না, হাইকোর্ট। নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক প্রাণহানির পরও পুরনো ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদামগুলো না সরানোর কারণে আদালত বলছে চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের দায় কাউকে না কাউকে নিতেই হবে। আগুনে মানুষ পুড়ে মরে, সিটি কর্পোরেশন শুধু আন্তরিক হলে হবে না, কাজও করতে হবে।

চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ, কেমিক্যাল অপসারণসহ কয়েক দফা নির্দেশনা চেয়ে করা পৃথক পৃথক তিনটি রিটের শুনানিতে সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এসব কথা বলেন।

২০১০ সালে নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডে শাতধিক প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির জন্য রাসায়নিকের কারখানা ও গুদামগুলোকে চিহ্নিত কর হয়, এবং পুরান ঢাকা থেকে সেগুলো সরিয়ে নিতে সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হলে চকবাজারের এই দুর্ঘটনা হয়ত ঘটত না মন্তব্য করে বিচারক বলেন, ‘পুরান ঢাকার ওইসব এলাকার বাড়ির মালিকরা তাদের বাসা দুই-তিনগুণ বেশিতে গোডাউন হিসেবে ভাড়া দেন। আর নিজেরা থাকেন গুলশান-বনানীতে। সিটি কর্পোরেশন এসব দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। পরে ভয়াবহ সব দুর্ঘটনায় মারা যায় সাধারণ মানুষ।’ ‘আমরা পত্রিকায় দেখেছি নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে প্রধানমন্ত্রী দুটি মেয়েকে দত্তক নিয়েছিলেন। আবার চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের পর পরই উনি তা মনিটরিং করেছেন।’

তিনি বলেন ‘উনি অনেক করছেন। কিন্তু একা তো এ দেশটা চালাতে পারবেন না। সবারই তো দায়িত্ব রয়েছে। অর্থনৈতিক দিক থেকে আমরা অনেক উন্নয়ন সাধন করেছি। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আমাদের দেশের ইমেজ (ভাবমূর্তি) নষ্ট হয়ে যাবে।’

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশারের আবেদনে আজ মঙ্গলবার দুপুর দুইটায় অ্যাটর্নি জেনারেলের উপস্থিতিতে রিট আবেদনগুলোর শুনানির সময় নির্ধারিত হয়।

আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন রুহুল কুদ্দুস কাজল, ইউনুস আলী আকন্দ, নূর মোহাম্মদ আজমী, খন্দকার মো. সায়েদুল কাউছার।

রবিবার হাইকোর্টে চারটি রিট আবেদন ও একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়। এসব আবেদনে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ চাওয়ার পাশাপাশি কেমিকেলের গুদাম-কারখানা অপসারণ ও বাণিজ্যিকভাবে মজুদ করা গ্যাস সিলিন্ডার অপসারণসহ চাওয়া হয়েছে নির্দেশনা।

এ আবেদনে ২০১০ সালের নিমতলী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে এসব আবেদনে।

/এফএফ

Comments