ঝিকরগাছায় প্রকাশ্যে ঘুরছে ফারুক হত্যার আসামিরা, নির্বিকার পুলিশ

প্রকাশিত: ৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৯

যশোর প্রতিনিধি: যশোরের ঝিকরগাছায় ইজিবাইক চালক ফারুক হোসেন (৩০) হত্যার ঘটনায় মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পরিবারের সদস্যরা।

নিহতের ভাই মহিউদ্দীন ও তার স্বজনদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে আসামিরা। দুইজন আসামি কারাগারে থাকলেও প্রকাশ্যে ঘুরছে অন্য ১৭ জন আসামী।

বাদী পক্ষের অভিযোগ, আসামিরা স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির শেল্টারে থাকায় কোনো কিছুকে পরোয়া করছেন না। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় গত ২৩ জানুয়ারি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে ইজিবাইক চালক ফারুক হোসেনকে (৩০) কুপিয়ে জখম করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা।

প্রথমে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওযায় ওইদিনই ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। সেখান থেকে তাকে বাড়ি ফেরত পাঠানো হয়। ২৭ জানুয়ারি রাতে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে তিনি মারা যান।

মারপিটের ঘটনায় ২৫ জানুয়ারি ফারুক হোসেনের ভাই মহিউদ্দিন বাদী হয়ে ঝিকরগাছা থানায় মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন- ঝিকরগাছা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের মৃত জামাল বিশ্বাসের ছেলে মশিয়ার রহমান, মতিয়ার রহমান, আবুল কালাম, মিকাইল ও তার ছেলে উজ্বল, মৃত ইমদাদুল হকের ছেলে ওলিয়ার রহমান, আবদুল আলীম, মনসের আলীর ছেলে আনসার আলী, ওলিয়ার রহমানের ছেলে মনোয়ার হোসেন, মৃত আহাদ আলীর ছেলে শুকুর আলী, খোকন, নিচার আলী কটা, মৃত আনার মিস্ত্রীর ছেলে আবদুল আলীম, মৃত কুদরত আলীর ছেলে মোন্তাজ আলী, মশিয়ার রহমানের ছেলে সোহাগ, মশিয়ার রহমানের স্ত্রী সাধনা বেগম, মৃত হারেজ বিশ্বাসের ছেলে কেসমত আলী, ইসমাইল বিশ্বাসের ছেলে মিন্টু, মন্টু মিয়ার ছেলে রানা।

এদের মধ্যে মশিয়ার ও মতিয়ার রহমান কারাগারে রয়েছে। অন্য ১৭জন আসামি গত ২৬ জানুয়ারি জামিন নেন।

এদিকে, আসামিদের জামিনের একদিন পর ২৭ জানুয়ারি ফারুক হোসেন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এরপর গত ২৮ জানুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা ঝিকরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিকদার রকিব উদ্দিন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মারপিটের মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করার আবেদন করলে আদালত নথিভুক্ত করেছে।

হত্যা মামলা রেকর্ড হলেও আসামিরা জামিনে রয়েছেন। প্রকাশ্যে তারা নানাভাবে বাদী পক্ষকে হুমকি দিচ্ছে। আসামিদের মদদ দিচ্ছেন মাগুরা ইউনিয়নের সাবেক এক চেয়ারম্যান, অভিযোগ ভুক্তভুগি পরিবারের। এতে নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত তারা।

নিহত ফারুক হোসেনের ভাই তাজউদ্দিন বলেন, মাদকের ব্যবসার প্রতিবাদ করায় ফারুক হোসেন, বাবা গোলাম হোসেন, ভাই মহিউদ্দিন ও মাহাবুবুর রহমানকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে আসামিরা। এঘটনায় ফারুক তিনদিন পর মারা যায়।

ফারুক মারা যাওয়ার একদিন আগেই ১৭আসামি জামিন নিয়েছে। তারা এখন প্রকাশ্যে আমাদের হত্যার হুমকি ধমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে। একই সঙ্গে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করছে।

ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাদী পক্ষের লোকজনকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, এমন কোনো খবর আমার জানা নেই। বাদী পক্ষের লোকজনও আমাকে জানাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

/আরএ

Comments