টানেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ উদ্বোধনে চট্টগ্রাম আসছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:২১ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৯

ইমরান হোসাইন, বিশেষ প্রতিবেদক: দুই মেগাপ্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করতে আজ রোববার চট্টগ্রামে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় পতেঙ্গায় উপমহাদেশের প্রথম টানেল নির্মাণে বোরিং ও লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যটন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিলারের পাইলিংয়ের কাজেরও উদ্বোধন করবেন তিনি।

টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটাই শেখ হাসিনার প্রথম চট্টগ্রাম সফর। আর দুই প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে প্রায় দেড় হাজার মানুষের উপস্থিতিতে হবে সুধী সমাবেশ। একইসময় সমাবেশের পাশে আউটার রিংরোডে সাধারণ মানুষের উপস্থিতির আয়োজন করা হয়েছে।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় আউটার রিং রোডে বানানো হয়েছে মঞ্চ। ৭২ ফুট দীর্ঘ নৌকার আদলে নির্মিত হয়েছে সুধী সমাবেশের স্টেজ। নৌকার দৈর্ঘ্য ৭২ ফুট হলে মূল স্টেজের দৈর্ঘ্য ৪৮ ফুট ও চওড়া ২৮ ফুট। স্টেজের পেছনে কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে টানেলের গ্রাফিক্স দেখানো হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণ প্রকল্পের বোরিং কাজের উদ্বোধন উপলড়্গে সুধী সমাবেশের আয়োজন করেছে টানেল নির্মাণ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, স্টেজে সুধী সমাবেশে দেড় হাজার লোকের বসার আয়োজন করা হয়েছে।

আজ টানেলের বোরিং কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে সুধীজনদের উপস্থিতিতে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এই সুধী সমাবেশে কারা আসবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, নগরের রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রধানগণ সমাবেশে উপসি’ত থাকবেন।

টানেলের বোরিং কার্যক্রম কিভাবে উদ্বোধন করবেন জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী হারম্ননুর রশিদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কম্পিউটারের মাধ্যমে টানেল বোরিং মেশিনের (টিবিএম) সুইচ বাটন অন করে বোরিং কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘টানেলের উদ্বোধন শেষে একই এলাকায় সিডিএ’র এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করবেন। এসময় একটি ফলক উন্মোচন করা হবে। আর দুই প্রকল্পের উদ্বোধনের পর সাগড়পাড়ে সুধী সমাবেশে বর্ক্তৃতা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।’
সুধী সমাবেশের পাশে আউটার রিং রোডের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত থেকে খেজুরতলা পর্যনত্ম প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় জনসমাগমের উপসি’তির আয়োজন করা হয়েছে। তবে এসব লোকজন সুধী সমাবেশের মূল পয়েন্টে আসার সুযোগ পাবে না। মুসলিমাবাদ ও র্যাব-৭ অফিসের পাশ দিয়ে খেজুরতলা অংশে রিং রোডে পয়েন্টে সাধারণ মানুষ উঠার সুযোগ রাখা হয়েছে। এজন্য দীর্ঘ এলাকায় সাউন্ড সিস্টেম এবং প্রজেক্টেরও বসানো হয়েছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে সুধী সমাবেশের স্টেজে যাওয়ার সময় আউটার রিং রোড প্রকল্পের আওতায় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ দেখবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম অসাধারণ সাজে সাজিয়েছেন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতকে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মানুষের বিনোদনের কোনো জায়গা নেই। এই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনস্পট হিসেবে গড়ে তুলতে সিডিএ কাজ করছে। পতেঙ্গা সৈকতের পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় বিশেষ পর্যটন স্পট গড়ে তোলা হবে। এখানে বিভিন্ন ধরনের রাইডও থাকবে।

সিডিএ প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সৈকতে তিন ধাপে সাগর দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। সাগরের পাড়ে রয়েছে দীর্ঘ ওয়াকওয়ে। এর পরের ধাপে রয়েছে গ্যালারি। যেখানে বসে বসে সাগরের সৌন্দর্য দেখা যাবে। আর পরের ধাপে রয়েছে কার পার্কিং অর্থাৎ গাড়ি চলাচলের সুযোগ।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকায় নির্মাণ হচ্ছে এই টানেল। চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড তা বাসত্মবায়ন করছে। অপরদিকে লালখান বাজার থেকে বিমান বন্দর পর্যনত্ম চার লেনের ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স র্যানকিন জেবি। ২ হাজার ৮ ৫৪ কোটি ৫৬ লাখ ১২ হাজার ১১৩ টাকায় প্রকল্পটি বাসত্মবায়িত হচ্ছে।

/আরএ

Comments