লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে অসন্তুষ্টির কথা জানালেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৭:১৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮ একুশ ডেস্ক: নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে সন্তুষ্ট নই, তবে আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ কথাটা এখন একটা অর্থহীন কথায় পর্যবসিত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ইসিতে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের লিখিত জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। মাহবুব তালুকদার বলেন, আপনারা নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, নির্বাচনে এখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কিনা? তাহলে উত্তর পেয়ে যাবেন। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার তার কক্ষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সকালে আমাকে চারজন সাংবাদিক কিছু প্রশ্ন করেন। আমি তাদের প্রশ্নগুলো লিখে দিতে বলেছিলাম। এখন লিখিতভাবে সেসব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। আর কোনো প্রশ্ন আমি নেব না বা উত্তর দেব না। প্রশ্ন: আপনার মতে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কি? উত্তর: আমি মোটেই মনে করি না নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু আছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কথাটা এখন একটা অর্থহীন কথায় পর্যবসিত হয়েছে। প্রশ্ন: সিইসি বলেছেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। আপনি তার বিরোধিতা করছেন? উত্তর: আমি কখনই তার বক্তব্যের বিরোধিতা করি না। তিনি তার কথা বলেন। আমি প্রয়োজনে আমার ভিন্ন মত প্রকাশ করি। আপনারা তো সাংবাদিক। আপনারা দেশের সব খবর রাখেন। সব কিছু দেখেন। আপনারা নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, নির্বাচনে এখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কি না? তাহলে উত্তর পেয়ে যাবেন। প্রশ্ন: সারাদেশ থেকে বিরোধী দলের প্রচারে বাধা দেওয়ার নানা অভিযোগ আসছে। এ অবস্থায় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন কী সম্ভব? উত্তর: আমি আশাবাদী মানুষ। এখনও যে সময়টুকু আছে তাতে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটির বিচারকদের আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করা উচিত। আমি মনে করি, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জকভাবে পাল্টে যাবে। প্রশ্ন: সিইসি বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু হবে। আপনিও কি তাই মনে করেন? উত্তর: সব দল অংশগ্রহণ করলেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলা হয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া একটি প্রাথমিক প্রাপ্তি। আসল কথা হচ্ছে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে কি না এবং বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে কি না? নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না হলে অংশগ্রহণমূলক হলেও কোনো লাভ নেই। প্রশ্ন: নির্বাচনে জনপ্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আছে? উত্তর: নির্বাচন আমরা সরাসরি করি না। রিটার্নিং অফিসার, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আছে। তাদের বাহিনীর সদস্যরা কতটা তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে, তা তারা বলতে পারবেন। প্রশ্ন: বর্তমান অবস্থায় আপনার কি কোনো মেসেজ আছে? উত্তর: আমার বক্তব্য হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রার্থী, ভোটার এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ আইনের বাইরে যাবেন না। আইনকে নিজস্ব ধারায় চলতে দিন। নির্বাচনে আচরণবিধি মেনে চলুন। নির্বাচনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সহায়তা করুন। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বরাবরই কমিশনের অনিয়মের ব্যাপারে সরব। একাধিকবার তিনি সিইসির বিরুদ্ধে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগে কমিশন বৈঠকও ত্যাগ করেছিলেন। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে সু-স্পষ্টভাবে মত পার্থক্যের কথা উল্লেখ্য করে আলোচনায় আসেন। সেনাবহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার ব্যাপারেও তিনি মত দেন। /এসএস Comments SHARES জাতীয় বিষয়: