টাঙ্গাইলে নিজের ধান ক্ষেতে নিজেই আগুন দিলেন কৃষক

প্রকাশিত: ১০:১৫ অপরাহ্ণ, মে ১৩, ২০১৯

ডেস্ক: টাঙ্গাইলে ধানের দাম কম ও ধান কাটার শ্রমিক সংকটের কারণে নিজের ফসলি জমিতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন এক কৃষক। গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এ ছিল কৃষকের ক্ষোভ-হতাশা ও প্রতিবাদের একটি আচরণ। রবিবার (১২ মে) দুপুরে জেলার কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়নের বানকিনা গ্রামের আব্দুল মালেক তার রোপনকৃত পাকা ধানে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে অন্যান্য কৃষকরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন।

কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, ‘ধান কাটতে শ্রমিককে দিতে হচ্ছে প্রায় এক হাজার টাকা। তারপরও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ধান কেটে বাড়িতে আনতে এক মণ ধানের মূল্য প্রায় এক হাজার টাকা করে পড়ছে। অপরদিকে ধান বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে ৫শ’ টাকা করে। প্রতিমণে আমাদের ঘারতি পড়ছে ৫শ’ টাকা করে।’

ওই কৃষক আরও বলেন, ‘শ্রমিকের জন্য বাজারে গিয়ে কয়েকবার শ্রমিক না পেয়ে ফেরত এসেছি। ক্ষেতে ধান পাকলেও তা ঘরে তুলতে পারছি না। তাই দিশেহারা হয়ে এই কাজ করেছি।’ তিনি এক দাগের ৫৬ শতাংশের ধান ক্ষেতে আগুন ধরিয়ে দিলে অন্যান্য কৃষকরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন।

একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ার কারণে শ্রমিকের দামও বেড়ে গেছে। তারা শ্রমিকের বিকল্প হিসেবে ধান কাটা ও মাড়াই যন্ত্র প্রতিটি এলাকায় দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় এবার ইরি-বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৭০২ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এবছর ফলন ভালো হয়েছে। এপর্যন্ত জেলায় প্রায় ৩০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। বাকি ৭০ শতাংশ ধান পেকে থাকলেও কৃষকরা শ্রমিকের অভাবে ধান ঘরে তুলতে পারছেন না। প্রতিদিন একজন শ্রমিককে দিতে হয় ৯শ’ থেকে ১ হাজার টাকা। আর বর্তমান বাজারে ধানের মূল্যে ৫০০ টাকা মণ। এতে প্রায় দুই মণ ধান বিক্রি করে কৃষক একজন শ্রমিকের মজুরি দিতে হচ্ছে। আবার অধিক মজুরি দিয়েও দিনমজুর পাচ্ছেন না কৃষকরা। ফলে জমিতে পাকা ধান জমিতে পড়েই নষ্ট হচ্ছে।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘শুনেছি এক কৃষক পাকা ধান ক্ষেতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এখন শ্রকিমের মূল্য বেশি। আর বাজারে ধান মণপ্রতি ৫শ’ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এই সময়ে ধানের বাজার কিছুটা কম থাকলেও কৃষক যদি ধান সংরক্ষণ করে রাখে তবে ক’দিন পরেই অধিক মূল্য পাবেন।’

এমএম/

Comments