দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন : হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ৪:৫৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১০, ২০২৩

 মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলান এর জামিন শুনানি চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবিকে তিরস্কার করেছেন হাইকার্ট। এক পর্যায়ে ‘দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি এমদাদুল হক আজাদ।

তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় দণ্ডিত অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিন এলানের জামিন শুনানি হয় হাইকোর্টে বিচারপতি এমদাদুল হক আজাদের একক বেঞ্চে। শুনানি শেষে আদালত অধিকার সম্পাদক আদিলুর ও পরিচালক এলানের জামিন মঞ্জুর করেন এবং জরিমানা স্থগিত করেন।

এ সময় আদালতে জামিনের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এজে মোহাম্মদ আলী ও অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন ভুঁইয়া। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম।

শুনানির শুরুতে আদিলুর-এলানের পক্ষে জামিন শুনানি করতে ডায়াসের সামনে দাঁড়ান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী। এসময় রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. রেজাউল করিম দাঁড়িয়ে যান। তিনি বলেন, আমাদেরও বক্তব্য আছে।

জামিন পেলেন আদিলুর ও এলান

তখন বিচারপতি বলেন, আসামিদের আইনজীবীদের আগে বলতে দিন। আপনি এখন লাফ দিয়ে উঠছেন কেন?

এরপর আসামিদের আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় আসামিদের দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় আবারও জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম।

তখন আদালত উষ্মা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তাহলে তাদের ২ বছরের সাজা দিলেন কেন? যাবজ্জীবন দণ্ড দিতে পারলেন না! দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন।’

উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার অভিযানে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে করা মামলায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিন এলানের দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। যা অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এএম জুলফিকার হায়াত এই রায় ঘোষণা করেন।

পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আপিল করা হয়। পাশাপাশি জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়।

২০১৩ সালে দায়ের হওয়া এই মামলার অধিকারের সম্পাদক আদিলুর এবং সংগঠনটির পরিচালক নাসির অভিযুক্ত হন।

২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ৬১ জন নিহত হওয়ার কথা জানায় অধিকার। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এই সংখ্যা ১৩ বলে দাবি করা হয়। সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে ওই বছরের ১০ জুন সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে সেটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। এই মামলা তারা দুজনই জামিনে ছিলেন।

Comments