ভৈরবে ইউপি চেয়ারম্যানের অনুমতিতে শতবর্ষী তালগাছ কর্তন

প্রকাশিত: ৬:৪০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৭, ২০১৯

নিউজ ডেস্ক

দেশে যখন গ্রীষ্ম ও বর্ষা কালে প্রতিকূল আবহাওয়ায় অহরহ বজ্রপাতের কারণে একের পর এক প্রাণহানীর ঘটনা ঘটছে। তখন সারা দেশে একযোগে সরকার লাখ লাখ টাকা খরচ করে তালগাছের বীজ রোপনের উদ্যোগ নিয়েছে। কেননা এই তালগাছই একমাত্র গাছ যে কিনা বজ্র নিরোধক হিসেবে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে।

কিন্তু তখনও হুশ জাগেনি ভৈরবের শিমুলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান যোবায়ের আলম দানিসের মনে। তিনি অসৎ উদ্দ্যেশে তারই পরিষদের এক ইউপি সদস্যকে নির্দেশ দিলে আজ শনিবার সকালে বজ্র প্রতিরোধক শতবর্ষী তালগাছটি কেটে ফেলা হয়। ফলে এ তালগাছ কাটা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আলোচনা-সামলোচনার ঝড় ওঠেছে।

পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সাংবাদিকরা প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলে টনক নড়ে। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনিসুজ্জামানের নিদের্শে তার অফিসের নায়েব ঘটনাস্থল শিমুলকান্দি বাজারে গিয়ে তালগাছ কাটার সত্যতা পায়। একই সাথে তারা খন্ডিত গাছটি জব্ধ করে এবং জড়িতদের নাম ও তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে আসে।

এলাকাবাসী জানায়, শতবর্ষী তালগাছটি প্রায় ১শ ফুটের মতো লাম্বা হয়েছে। যা শিমুলকান্দি গ্রামের নানা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কালের সাক্ষী হিসেবে দাড়িয়ে ছিলো। প্রায় গেল এক যুগ আগে সমাজের গাছ শত্র“ মানুষের নজড় পড়ে। ফলে ততকালীন ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আফিকুল ইসলাম হারিছের কাছে একটি মহল এ তালগাছটি কাটতে ৪০ হাজার টাকা দাম করেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান হারিছ গাছটি কাটতে ততকালীন ইউএনও এবং এসিল্যান্ডের অনুমিত চাইলে তারা অনুমিত দেননি। পরে দেশে বজ্র প্রতিরোধক গাছ হিসেবে সারাদেশে তালগাছের প্রতি যত্নশীল হতে আহবান জানায় সরকার। একই সাথে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা খরচ করে তালগাছের বীজ রোপন করছে সরকার।

তালগাছ সমাজে বসবাসকারী মানুষের ’প্রকৃত বন্ধু’ উল্লেখ করে শিমুলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, যে গাছ রক্ষায় এবং বীজ রোপনে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। সে তালগাছ ঠিকিয়ে রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য। কিন্তু সামান্য স্বার্থের জন্য সমাজের উপকারী এই তালগাছ কাটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে শিমুলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান যোবায়ের আলম দানিস বলেন, গাছটিতে পোকা আক্রমন করায় যেকোনো সময় ভেঙ্গে পড়ে জানমালের ক্ষতি হতে পারে বলে বাজার কমিটির লোকজন আমাকে জানালে গাছটি কেটে ফেলতে বলা হয়। এছাড়া গাছটি কাটতে এসিল্যান্ডের অনুমতি রয়েছে বলেও দাবী করেন তিনি।

যদিও তালগাছ কাটতে কোনো ধরণের অনুমতি দেয়া হয়নি বলে জানান, ভৈরব উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনিসুজ্জামান। যারা এই গাছ কাটার সাথে জড়িত রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Comments