সাংবাদিক নির্যাতন মামলা, জামালপুরে ছাত্রলীগ নেতা বহিস্কার

প্রকাশিত: ৩:৫৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০১৯

জামালপুর প্রতিনিধি:  দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হাসান খানকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।

কেন তাকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করা হবে না তা জানাতে ৭ দিনের সময় দেয়া হয়েছে। রাকিব হাসান খান জামালপুরের সাংবাদিক মোস্তফা মনজুর উপর সন্ত্রাসী হামলা মামলার পলাতক আসামী।

জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিহাদুল আলম নিহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ বিন জালাল প্লঅবন স্বাক্ষরিক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে ১৮ জুন জেলা ছাত্রলীগের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

গত ২৮ মে দুপুরে জামালপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে জমির দলিল নিবন্ধনের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে কালের কণ্ঠের সাংবাদিক মোস্তফা মনজুর ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়।

সাংবাদিক মোস্তফা মনজু’র ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার নয়জন আসামির মধ্যে প্রধান আসামি জামালপুর পৌরসভার কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য হাসানুজ্জামান খান রুনুসহ আটজনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে গত ১২ জুন তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতের আদেশের পর কোর্ট পুলিশ তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে। মামলাটির গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আটজন আসামি ওইদিন জামালপুর সদর আমলি আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে শুনানি শেষে তাদের প্রত্যেকের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোলায়মান কবীর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক মোস্তফা মনজু’র দায়ের করা মামলাটির প্রধান আসামি পৌর কাউন্সিলর ও স্ট্যাম্পভেন্ডার হাসানুজ্জামান খান রুনুসহ নয়জন আসামি গত ৩০ মে আদালত থেকে জামিন নিয়ে মামলার বাদীসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। ১ জুন ও ২ জুন মামলার বাদীসহ জেলায় কর্মরত ৪৮ জন সাংবাদিক জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পৃথকভাবে জামালপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

গত ৯ জুন মামলার বাদী তার আইনজীবী মো. শাসছুল হকের মাধ্যমে জামালপুর সদর আমলি আদালতে মামলাটির সকল আসামিদের জামিন বাতিলের আবেদন জানান। বাদীর আবেদন মঞ্জুর করে বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোলায়মান কবীর তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

১২ জুন মামলার ৫ নম্বর আসামি জেলা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হাসান খান ব্যতীত বাকি আটজন আসামি জামালপুর সদর আমলি আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবী আমান উল্লাহ আকাশের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ বাতিল চেয়ে আসামিদের জামিনের আবেদন জানান।

এ সময় বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. ফজলুল হকসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী আসামিদের জামিনের আপত্তি জানান। কারাগারে থাকা আসামীরা হচ্ছে-পৌর কাউন্সিলর হাসানুজ্জামান খান রুনু, জামালপুর শহরের পাথালিয়া এলাকার মো. উকিল মিয়া এবং দেওয়ানপাড়া এলাকার তুহিন খান, স্বজন খান, সিদ্দিক মন্ডল, আলমগীর বাচ্চু, দলিল লেখক হাবিবুর রহমান ও তুষার খান।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ মে দুপুরে জামালপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে জমির দলিল নিবন্ধনের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিক মোস্তফা মনজুর ওপর সন্ত্রাসী
হামলা হয়।

একজন সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় সাংবাদিকসহ জামালপুরের বিভিন্ন মহলে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জামালপুর প্রেসক্লাবসহ সারা জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা ধারাবাহিক আন্দোলন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

এমএম/

Comments