লক্ষ্মীপুরে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করায় ডাকাতি

প্রকাশিত: ১২:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮

মোঃ সাকিব হোসেন, নোয়াখালী: লক্ষ্মীপুরে ধর্ষণ চেষ্টা মামলা করায় সৌদি প্রবাসীর বসতঘরে ডাকাতি করার অভিযোগ উঠেছে আসামিদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন ভূক্তভোগীরা। সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বড়ালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, ডাকাতির ঘটনায় বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) ১৩ জনকে আসামি করে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। এতে ৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ৪ সেপ্টেম্বর স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দুইটির বাদী প্রবাসী ইমাম হোসেনের স্ত্রী। তার মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

মামলা সূত্র জানা গেছে, স্কুলপড়য়া মেয়েকে নিয়ে প্রবাসী ইমাম হোসেনের স্ত্রী বড়ালিয়া গ্রামে বসবাস করে আসছেন। তার দুই ছেলে ঢাকা থেকে পড়ালেখা করে। তাদের প্রতিবেশী এক নারীর আত্মীয় বশিকপুর গ্রামের ফরিদ প্রবাসী ইমামের মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে অসম্মতি জানালে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে ফরিদ তাকে উত্যক্ত করে।

গত ২৮ আগস্ট ফরিদ ও জসিম মুখ চেপে জোরপূর্বক বাড়ির উঠান থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে একটি ঘরে আটকে রেখে ফরিদ জোরপূর্বক ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়। খবর পেয়ে দত্তপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. বুলবুল ইসলাম খাঁন এসে তালাবদ্ধ ঘর থেকে মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে পরিবারের জিম্মায় তাকে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ফরিদ, জসিম উদ্দিন, রিমন, বড়ালিয়া গ্রামের আরমান হোসেন ও রাজু মিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্তের জন্য চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেয় আদালত। মামলা করার পর থেকে আসামিদের হুমকির মুখে পালিয়ে মেয়েকে নিয়ে পাশ্ববর্তী করইতলা গ্রামে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। ওই মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা ৩ সেপ্টেম্বর রাতে প্রবাসীর বসতঘরে ডাকাতির ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ করেছেন প্রবাসী পরিবার। এতে স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৮ লাখ টাকার মালামাল লুটে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আরমানকে প্রধান করে অজ্ঞাতসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

প্রবাসীর স্ত্রী মায়া বেগম বলেন, মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় ফরিদ তাকে ধর্ষণ চেষ্টা করে। ওই দিন হামলা করতে ৫০-৬০ বহিরাগত লোক নিয়ে আমার বাড়ি ঘেরাও করে। পরে পুলিশ এসে আমাদেরকে উদ্ধার করে। এখন আমরা বাড়িতে যেতে পারছি না। চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত ফরিদ বলেন, আমাকে তারা নির্দয়ভাবে পিটিয়ে আহত করেছে। ধর্ষণ চেষ্টা ও ডাকাতির অভিযোগ সত্য নয়। তারা আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে।

দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আনা হয়। প্রবাসী পরিবারের সদস্যরা ফরিদকে আটক করে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে। ডাকাতির ঘটনা সত্য নয়।

/এমএম

Comments