মুক্তাগাছায় যাত্রী দূর্ভোগ বাড়ছে, সিএনজি-অটোরিকশার ভাড়া নৈরাজ্য থামছে না নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১১:০৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০১৯ আশরাফুল ফরাজী, মুক্তাগাছা প্রতিনিধি: একের পর এক অযুহাত সৃষ্টি করে বেশি ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে সিএনজি চালিত ৪ স্টোকের অটোরিকশা। যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেই দাঁড় করাচ্ছে অযুহাত কখনো শরীর খারাপ, কখনো গ্যাস নেই আবার কখনো গাড়ী নষ্ট। তাছাড়াও নিজের চলাচলের রুটে বেশি যাত্রী দেখা মাত্রই সৃষ্টি হয় আরেকটি নতুন অযুহাত এক রুটের সিএনজি যেতে চায় অন্য রুটে। নিজের রুটে যেতে কেউ কেউ আবার বেশি ভাড়া হাঁকেন। ৩০ টাকার ভাড়া মুহূর্তেই হয়ে যায় ৫০-৮০ টাকা। এইরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহ-মুক্তাগাছা রুটের যাত্রীদের। একাধিক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, সিএনজি চালিত অটোরিকশার কোন নিয়ম কানুন বা নিয়ন্ত্রন না থাকায় দিন দিন এর চালকগন বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে। নানা অজুহাতে ইচ্ছা মতো ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে যা মূল ভাড়ার দ্বিগুণ বা তিনগুণ। অস্বাভাবিকভাবে এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে যাত্রীরা গাড়ি চালকদের নিকট জিম্মি হয়ে পড়ছেন। জানা যায়, ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা পর্যন্ত চলাচলের রাস্তা মাত্র ১৪ কি.মি। প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়া ৩০ টাকা হলেও সিএনজিতে ভাড়া প্রদান করতে হয় ৫০-৮০ টাকা। তবে সবচেয়ে বেশি ভূগান্তির শিকার হোন ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা গামী যাত্রীরা। ময়মনসিংহ সিএনজি স্টেশনে সিএনজি বেশি থাকলেও কেউ মুক্তাগাছা আসতে চায় না এবং গাড়ি কম থাকলে কখনো ২০-৫০ টাকা বেশি দিতে হয়। নিরূপায় যাত্রীদের বাধ্যহয়ে তা মেনে নিতে হয়। চালককে ন্যায্য টাকায় রাজি করাতে না পেরে যাত্রী ও সিএনজি চালকের মধ্যে তর্কা-তর্কির সৃষ্টি হয় যা অনেক সময় হাতাহাতিতেও গড়ায়। আরো জানা যায়, মুক্তাগাছা থেকে ময়মনসিংহ চলাচলের মাত্র দুটি মাধ্যম একটি হলো সিএনজি চালিত অটোরিকশা আর অপরটি হলো লেগুনা (পালকি)। লেগুনা ভাড়া স্বাভাবিক থাকলেও গাড়ি কম থাকায় যাত্রীরা এই বাহনে চলাচল করতে পারে না। অপরদিকে যাতায়াতে সময় কম লাগা ও যাত্রী কম বহন করায় যাত্রীদের প্রথম পছন্দ হলো সিএনজি চালিত অটোরিকশা। চলাচলের জনপ্রিয় মাধ্যমে হওয়ায় এর ফায়দা লুটছে সিএনজি অটোরিকশার চালকদ্বয়। তাছাড়া সিএনজি চালিত অটোরিকশার ভাড়া আদায়ের কোন নিয়ম কানুন আছে বলে কখনোই প্রতিয়মান হয়না। কারন প্রশাসন কর্তৃক ভাড়া আদায়ের তালিকা এবং রুটের নাম ঠিক করে স্টিকার প্রদান করলেও তা আদায়ের ক্ষেত্রে বাস্তবের সাথে কোন ভাবেই সামঞ্জস্য নয়। সিএনজি প্রতি ৪ জন যাত্রী নিয়ে চলাচলের শর্ত থাকলেও প্রশাসন এর সামনে দিয়ে ৫ জন যাত্রী নিয়ে হরহামেশাই চলাচল করছেন তারা। ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা গামী একজন যাত্রীর সাথে কথা বলে যায়, মুক্তাগাছা-ময়মনসিংহ যাতায়াতকারী সিএনজি চালকেরা যে ভাবে খুশি সে ভাবে বাড়তি ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে। আবার সন্ধ্যার পর মুক্তাগাছা- ময়মনসিংহ স্টিকার বহনকারী সিএনজি থাকার পরেও চালক গন মুক্তাগাছা আসতে অনিহা প্রকাশ করে। তারা জামালপুরের যাত্রী ছাড়া আসতে চায় না। এতে মুক্তাগাছায় চলাচলকারী সাধারণ যাত্রীরা পড়ে চরম দূর্ভোগে। নাগরিক আন্দোলন মুক্তাগাছা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাতিল মোঃ তারেক বলেন, বাড়তি ভাড়া আদায়ে জনগণের ভোগান্তি এখন চরম পর্যায়ে রয়েছে। ভাড়া কমানোর বিষয়টি যেহেতু গনদাবী সেই প্রেক্ষিতে নাগরিক আন্দোলন সব সময় জনতার সাথে থাকবে। আন্তরিকতার সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ , স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বিত কাজের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে উত্তরণ পাওয়া সম্ভব। বাড়তি ভাড়া কমানো না হলে আগামীতে জনগনের ন্যায্য দাবী আদায়ে নাগরিক আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার কথাও জানান তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার ভূমি (ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) রাজিব উল আহসান অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদাই তৎপর রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা পয়েন্টে পয়েন্ট পুলিশ মোতায়েন করেছি এবং ৫ জন যাত্রীবহন কারী সিএনজি গুলো থেকে জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে। মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমস্যা থেকে উত্তরণের ব্যবস্থা করা হবে। এমএম/ Comments SHARES সারাদেশ বিষয়: