মিয়ানমারে ফেরত না পাঠানোর দাবিতে রোহিঙ্গারাদের বিক্ষোভ নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৩:০৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০১৮ একুশ ডেস্ক: মিয়ানমারে ফেরত না যেতে পুটিবনিয়া ও উনচিপ্রাং ক্যাম্পে বিক্ষোভ করেছে রোহিঙ্গারা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ করছিল তারা। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম এর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গাদের ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানালে তারা এতে সম্মত হয়নি। দুপুর একটা পর্যন্ত ট্রানজিট ক্যাম্পে কোন রোহিঙ্গা আসেনি। ফলে সব প্রস্তুতি থাকার পরও প্রত্যাবাসন একপ্রকার অনিশ্চিত হয়ে গেছে। এর আগে প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজারে নিজের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, যদি কেউ স্বেচ্ছায় যেতে চায় তাদের পাঠানো হবে। আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। কেউ রাজি হলে আমরা দুপুরে ঘুমধুমে ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যাব। বাংলাদেশ-মিয়ানমার চুক্তি অনুযায়ী, ১৫০ জনের ১ম রোহিঙ্গা দলকে বৃহস্পতিবার দুপুরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর কথা রয়েছে। পুটিবনিয়া ক্যাম্পের ইনচার্জ কাজী ওমর ফারুক বলেন, ১২৭ পরিবারের ১৩০ রোহিঙ্গাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাস-ট্রাক রেডি রাখা হয়েছে। মজুদ রাখা হয়েছে খাদ্য সামগ্রীও। তবে কোনও রোহিঙ্গা ফিরে যেতে চাইছে না। কেউ যেতে না চাইলে তাদের জোর করা হবে না। প্রসঙ্গত, গেল বছরের ২৪ আগস্ট নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রাখাইনে পূর্ব পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। নিপীড়নের মুখে গেল বছরের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এর আগে থেকে আশ্রয় নেওয়াসহ ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩০টি ক্যাম্পে অস্থায়ীভাবে অবস্থান করছে। এই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গেল ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি হয়। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দুই দেশের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করা হয়। স্মারকের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ মিয়ানমারের কাছে আট হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পাঠায়। যাচাই-বাছাই শেষে মিয়ানমার ওই তালিকা থেকে ৫ হাজার ৫শ’ জনকে প্রত্যাবাসনের ছাড়পত্র দেয়। গেল ৩০ অক্টোবর জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় প্রথম ধাপে ২ হাজার ২৫১ জন রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন ফেরত নেওয়া হবে ১৫০ জন রোহিঙ্গাকে। প্রথম ধাপের প্রত্যাবাসন কার্যক্রম আজ ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। প্রত্যাবাসনের জন্য টেকনাফের কেরুনতলী ট্রানজিট ক্যাম্প প্রস্তুত করা হয়েছে। অন্যদিকে, বান্দরবানের ঘুমধুমে আরও একটি ট্রানজিট ক্যাম্প প্রায় সম্পন্নের পথে। এদিকে, প্রত্যাবাসনের জন্য তৈরি করা তালিকায় থাকা রোহিঙ্গারা জানান, মিয়ানমারের ফেরার বিষয়টি কিছু দিন আগে তারা জেনেছেন। তবে কীভাবে এবং কখন যেতে হবে, সে সম্পর্কে তাদের ধারণা নেই। মিয়ানমারের অবস্থান সম্পর্কেও নূন্যতম ধারণা তাদের দেয়া হয়নি। এ কারণে অনেকেই ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে গেছে। যতদিন পর্যন্ত মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব, বসতভিটা, জমিজমা ফিরিয়ে না দেবে, ততদিন পর্যন্ত তারা মিয়ানমারে ফিরে যাবেন না। আরো পড়ুন: রোহিঙ্গারা কি আর ফিরে যাবে না? বিআইজে/ Comments SHARES জাতীয় বিষয়: MyanmarprotestasrepatriaciónRohingyaপ্রত্যাবাসনবিক্ষোভমিয়ানমারমিয়ানমারে ফেরত না পাঠানোর দাবিতে রোহিঙ্গারাদের বিক্ষোভরোহিঙ্গা