খুলনা মহানগরীতে ঈদ উপলক্ষে চার স্তরের নিরাপত্তা থাকবে: কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার

প্রকাশিত: ৯:৪৩ অপরাহ্ণ, মে ২৯, ২০১৯

শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা প্রতিনিধিঃ ঈদকে কেন্দ্র করে ঈদের আগে ও পরে খুলনা মহানগরীতে চার স্তরের নিরাপত্তা (পোশাককি পুলিশ, সাদা পোশাকে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও হুন্ডা মোবাইল) ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঈদকে উপলক্ষ্যে করে মার্কেট, শপিং মল, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট ও রেলস্টেশনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন এবং পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল ১১টায় (২৯ মে) খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তর সম্মেলন কক্ষে কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জনাব সরদার রকিবুল ইসলাম বিপিএম এর সভাপতিত্বে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে স্থানীয় সাংবাদিকের সাথে কেএমপি কর্তৃক গ্রহিত নিরাপত্তা বিষয়ে অবগতিকরণ মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, নগরীরর বিভিন্ন বিপণি বিতানে নগরবাসী যাতে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটা করে নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপদে বাসায় ফিরতে পারে, সে জন্য পোশাকে ও সাদাপোশাকে পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞান পার্টি, চোর ও ছিনতাইকারী ধরতে গোয়েন্দা নজরদারিও করা হচ্ছে। বিশেষ কওে কোন প্রকারের ইভটিজিং ও যৌন হয়রানী, মহিলা মকেটমার ও অজ্ঞান পার্টি, রোধ করার জন্য মহিলা পুলিশ বিশেষভাবে তৎপর থাকবে। যদি কেউ এসবের চেষ্টা করে, তাকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের জন্য খাদ্য বিষক্রিয়া রোধ কল্পে কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতার যাহাতে ঝামেলা মুক্তভাবে বেচাকেনা করতে পারে , সে জন্য ফুটপাত দখল মুক্ত করা হয়েছে। নগরীর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণে যানজোট মুক্ত রাখা হয়েছে। ব্যাংক ও ব্যবসায়ীগন টাকা-পয়সা স্থানান্তর করার জন্য পুলিশ সহায়তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা সচল আছে। ঈদের ছুটিতে দুই প্লাটুন কিউআরটি টিম (কুইক রেসপোস টিম) মোতায়েন থাকবে।

পরিবহন সেক্টররে কোন প্রকার চাঁদাবাজির সুযোগ নেই । এ ব্যপারে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে । বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিটি বাস ছাড়ার আগে যানবাহনের প্রয়োজনীয় সনদ পত্রের পাশাপাশি গাড়ী চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করার পর গাড়ী ছাড়ার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। রেল স্টেশনে যাহাতে টিকিট কালোবাজারী না হয়, তার গোয়েন্দা নজরদারী রাখা আছে।

জনাব সরদার রকিবুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে থানা অফিসার ইনচার্জদের শহরে ভাড়াটিয়া তালিকা হাল নাগাদ করার জন্য বলা হয়েছে । ঈদের ছুটিতে ফাঁকা শহরে পুলিশের পাহারা থাকবে, বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তাকর্মী থাকবে ।

ঈদের জামাতে নিরাপত্তার স্বার্থে মুসল্লিদের ঈদগাহ ময়দানে জায়নামাজ ও টুপি ব্যতীত কোন প্রকারের ব্যাগ বহন করতে নিষেধ করা করা হয়েছে। ঈদগাহ ময়দানে নিরাপত্তার জন্য ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, আর্চওয়ের ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ দায়িত্বপালন করবে ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, “খুলনায় নাশকতার কোনো আশঙ্কা ও সুযোগ নেই। এ জন্য আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর রয়েছে”।

সাংবাদিকের পক্ষ হতে মাদকের ব্যপারে জানানো হয় যে, বর্তমানে কেএমপি অভিযানে মাদক ব্যবসা অনেকটা দমন করলেও মুল মাদক ডিলারগন মাদক ব্যবসায়ীরা অভিনব পদ্বতিতে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এর সাথে জড়িত আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থার এক শ্রেণীর অসাধু সোর্স যারা বহাল তবিয়তে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে । প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নজরদারী রাখলে এদের নির্মুল করা সম্ভব এব্যপারে সাংবাদিক সমাজ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে ।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আশাস্ত করে বলেন, যদি কেহ মাদকের ব্যবসা করে , মাদক খায় ও মাদকের আখড়া বসায়, তাহলে আমাদেরকে জানাবেন। আপনার পরিচয় গোপন রাখা হবে। পরিবারের কেউ মাদকাসক্ত হলে সেই পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাদক ব্যবসা যেই করে, পুলিশকে খবর দিন, আমরা তাকে আইনের আওতায় আনব। আমরা জঙ্গিবাদকে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি, মাদককেও সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করব।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেএমপি’র এডিসি (সদর ও মিডিয়া) জনাব শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু ও স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকগন।

এমএম/

Comments