ঠাকুরগাঁওয়ে চিকিৎসকের দেওয়া ভুল ওষুধ খেয়ে গর্ভের সন্তানের মৃত্যু

প্রকাশিত: ৫:৪১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৮, ২০১৯

মোঃ ইলিয়াস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদক: ইট ভাটার কাজ করে খেটে খাওয়া শ্রমিক ফারাজুল ইসলামের স্ত্রী লাবনী আক্তার ৪ মাসের অন্তঃসত্তা। স্ত্রী হটাৎ জ্বরে আক্রান্ত হলে পরামর্শের জন্য স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক পরেশ চন্দ্র রায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরেশ চন্দ্র রায় পরামর্শ না দিয়ে নিজের দোকান থেকে ওষুধ দেন তার স্ত্রীকে খাওয়ানোর জন্য। সেই ওষুধ খেয়ে গুরুতর অসুস্থ্ হয়ে পড়েন তিনি। এতে গর্ভে থাকা তার ৪ মাসের সন্তান মারা যায়। এরপর শুরু হয় স্ত্রী লাবনী আক্তারের রক্তক্ষরণ। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় তাকে।

গত ৯ এপ্রিল এ ঘটনা ঘটে। শ্রমিক ফারাজুল ইসলামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের মহিষমারী কামারপাড়া গ্রামে।

এ ঘটনায় হাতুড়ে ডাক্তার পরেশ চন্দ্র রায়ের শাস্তির দাবি জানিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, পুলিশ সুপার, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ১৭ এপ্রিল লিখিতভাবে অভিযোগ দাখিল করেন ফারাজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, লাবনী আক্তারের শরীরে রক্ত দেয়া হচ্ছে। রোগীর অবস্থা দেখে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মুনিরুজ্জামান লিমন রোগীকে দেখে জানান, গর্ভে থাকা সন্তান নষ্ট হওয়ার ফলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।

শ্রমিক ফারাজুল ইসলাম জানান, হাতুড়ে ডাক্তার জেনে বুঝেই আমার প্রথম সন্তান নষ্ট করেছে। আমি এর বিচার চাই। এছাড়াও ডাক্তার পরেশ চন্দ্র রায় প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

অভিযোগের কথা অস্বীকার করে পরেশ চন্দ্র রায় মুঠোফোনে বলেন, কিছু ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এ সমস্ত অভিযোগ করে বেড়াচ্ছে। আমি আমার দোকান থেকে ওষুধ দেইনি বলেও দাবি করেন তিনি। তবে ওষুধের দোকান দিলেও দোকানের কোন ড্রাগ লাইসেন্স নেই বলে স্বীকার করেন তিনি।

বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি মোসাব্বেরুল হক বলেন, হাতুড়ে ডাক্তার পরেশ চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে ওই গৃহবধূর স্বামী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। এ ঘটনা পুলিশ তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি।

/আরএ

Comments