জবিতে তালাবদ্ধ ও বিতারিত ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সভাপতি-সম্পাদক

প্রকাশিত: ৬:৪৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
ছবি: চয়ন

বিশেষ প্রতিবেদক: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো একসাথে ক্যাম্পাসে ঢুকেই তালাবদ্ধ হন স্থগিত কমিটি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

দুপুর দেড়টার দিকে স্থগিত কমিটির সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসে এসে শোডাউন করলে তাদেরকে প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে স্থগিত কমিটির অন্যান্য পদধারী নেতাকর্মীরা।

স্থগিত কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটির দাবিতে ক্যম্পাসে বেশ কয়েকদিন থেকেই অবস্থান নিচ্ছে কয়েক শত নেতাকর্মী। বুধবার সকালেও তারা ক্যম্পাসে অবস্থান নিয়ে এ দাবি জানান।

কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরেই স্থগিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসে আসলে বাজে বিপত্তি। ক্যাম্পাসে এসে তারা কর্মীদের নিয়ে শোডাউন দেওয়ার সময় আগে থেকে অবস্থান নেওয়া নেতাকর্মীরা তাদের উদ্দেশ্য করে মিছিল দিতে থাকে। পরবর্তীতে ছাত্র সংসদ ভবণে তারা অবস্থান নিলে তাদেরকে তালাবদ্ধ করে রাখে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ এসে তালা ভেঙ্গে তাদেরকে উদ্দার করে।

এবিষয়ে স্থগিত জবি ছাত্রলীগের সৈয়দ শাকিল বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধের চাপা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আজকের নেতাকর্মীদের উৎফুল্যতা। কমিটি থাকা কালের চেয়ে নেতাকর্মীরা এখন বেশি উচ্ছাসিত। ক্যম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমরা সাধারণ ছাত্রছাত্রীর অধিকার আদায়ে সকল ধরনের অপকর্ম রোধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে ক্যাম্পাসে আছি। কিছু দিন আগেও ক্যাম্পাসে এমন সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করেনি। ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে কোন অপকর্ম করার কোন সুযোগ নেই।

এবিষয়ে স্থগিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহীম ফরায়েজী বলেন, ‘ছাত্রলীগের পদ অপব্যবহার করে তরিকুল- রাসেল নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য সব ধরনের অনৈতিক কাজ করছে। তার প্রতিবাদ আজকের এই গণজোয়ার। ভবিষ্যতে যেন আর এমন কর্মকান্ডে জড়াতে না পারে তার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে ক্যাম্পাসে নেতা কর্মীদের নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ। মেয়াদ উত্তীর্ণ এই স্থগিত কমিটি পূর্ণ বহাল যাতে না হয় এর জন্য দাবি জানাচ্ছি।

সাংগঠনিক নূরুল আফসার বলেন, ক্যাম্পাসের রাজনীতিকে সুষ্ঠু ধারায় ফিরিয়ে আনতে সাধারণ সিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা ক্যাম্পাসে ঐক বদ্ধভাবে আছি।

যুগ্ম সাধাণ সম্পাদক হোসনে মোবারক রিসাত বলেন, এই কমিটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যর্থ কমিটি। মেয়াদ পার হয়ে গেলেও তারা এখন পূর্নাঙ্গ কমিটি করতে পারে নি। এই ব্যর্থ কমিটি পূর্ণবহাল হোক এটা আমরা চাই না।

তিনি আরো বলেন আজকের শত শত ছাত্রলীগের কর্মীদের প্রতিবাদই বলে দেয় আমরা এই কমিটি চাই না।

সহ সভাপতি আল আমিন শেখ বলেন, মেয়াদ এই কমিটি আসার পর থেকে প্রায় প্রতি দিনই মারামারি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। আমরা এর পরিত্রান চাই।

তিনি আরো বলেন, উত্তীর্ণ কমিটির পূর্ণ বহাল হলে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। ছাত্রলীগের নাম বিক্রি করে মাদক ব্যবসা, ইয়াবা ব্যবসা আগে কখনও ছিল না। এগুলো ক্যম্পাসে এখন হরহামেশায় হয়। আমারা এর প্রতিবাদে নেমেছি। আশপাশের এলাকায় নানা অপকর্ম হচ্ছে প্রতি দিনই। আমরা এগুলো আর হতে দিব না। স্থগিত কমিটির ছত্রছায়ায় অনেকেই ক্যাম্পাসের আশেপাশে নানা চাঁদাবাজি সহ নানা অপকর্ম করে এগুলোর প্রতিবাদ করতেই আমরা ক্যাম্পাসে।

এদিকে স্থগিত কমিটির সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পদককের সাথে কথা বলার জন্য ফোনে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ৩ তারিখে ক্যম্পাসে ছাত্রলীগের দুপক্ষ সংঘর্ষে জেরে সব কার্যক্রম স্থগিত করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ। এর পর থেকেই স্থগিত কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটির দাবিতে ক্যম্পাসে অবস্থান নেন পদবঞ্চিত এবং নিগ্রিহিত ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা।

/আইকে

Comments