দুগিন

পুতিনের গুরুর মেয়ের ওপর হামলায় জড়িত ‘ইউক্রেনীয় নারী’

প্রকাশিত: ১২:৩৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কথিত গুরু, ইউক্রেন আগ্রাসনের পরামর্শক আলেকজান্ডার দুগিনের কন্যা দারিয়া দুগিন শনিবার (২০ আগস্ট) মস্কোর কাছে সড়কের ওপর গাড়িবোমা বিস্ফোরণ নিহত হন।

রাশিয়ার তদন্ত কমিটি বলছে, তাদের ধারণা দারিয়া নন, এই হামলার মূল টার্গেটে ছিলেন তার বাবা। দারিয়ার বাবা আলেকজান্ডার দুগিন রাশিয়ার একজন দার্শনিক, যিনি ‘পুতিনের মস্তিষ্ক’ নামে পরিচিত।

রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী এ ঘটনার জন্য সোমবার (২২ আহস্ট) ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছে। তাদের দাবি, দুগিনের ওপর হামলাকারী ইউক্রেনের একজন নাগরিক।

রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) জানিয়েছে, ‘ইউক্রেনের স্পেশাল সার্ভিস দুগিনকে পরিকল্পনা করে হত্যা করেছে। দুগিনের ওপর হামলাকারী একজন ইউক্রেনের নাগরিক। তার নাম নাতালিয়া ভোভক। হত্যাকাণ্ডের পর তিনি পালিয়ে এস্তোনিয়া চলে যান।’

তবে এস্তোনিয়ায়, প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় বাল্টিক নিউজ সার্ভিসকে একটি বিবৃতিতে বলেছে যে ‘এ বিষয়ে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো অনুরোধ বা অনুসন্ধানের জন্য তথ্য চাওয়া হয়নি এখনো’।

এফএসবি আরও জানায়, ভোভক গত জুলাই মাসে তার ১২ বছর বয়সী কন্যাসহ রাশিয়ায় যান। দুগিন যে ভবনে থাকতেন সেখানে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেন তিনি। তারা আরও জানিয়েছে, ঘটনার দিন ভোভক ও তার কন্যা একটি উৎসবে অংশ নেন যেখানে হত্যাকাণ্ডের কিছু আগে দুগিন ও তার মেয়ে দারিয়া দুগিন পৌঁছান।

রাশিয়ার এই সংস্থা সীমান্ত ক্রসিং এবং মস্কো অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের প্রবেশদ্বারে নজরদারিতে রাখা ক্যামেরা থেকে সন্দেহভাজন ব্যক্তির ভিডিও প্রকাশ করেছে।

এফএসবি বলছে যে, ভোভক ইউক্রেনের রাশিয়ান-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী দোনেটস্ক অঞ্চলের রাশিয়ায় প্রবেশের জন্য একটি লাইসেন্স প্লেট এবং মস্কোতে একটি কাজাখস্তান প্লেট ব্যবহার করে এবং এস্তোনিয়ায় পাড়ি দেওয়ার আগে ইউক্রেনের একটি প্লেট ব্যবহার করেন।

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখেইলো পোদোলিয়াক বোমা হামলায় ইউক্রেনের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। এক টুইট বার্তায়, তিনি এফএসবির দাবিগুলোকে কাল্পনিক বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি এ ঘটনাকে রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের অংশ হিসেবেও দেখছেন।

এদিকে, ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মেয়ের এ হত্যাকাণ্ডকে ‘জঘণ্য’ ও ‘নির্মম’ অপরাধ বলে আখ্যা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি বলেন, দুগিন খুবই ‘বুদ্ধিমতি’ এবং ‘গুণী’ ছিলেন। দুগিনের নিহতের ঘটনার পর পুতিন এই প্রথম তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন।

ঘটনার দিন আলেকজান্ডার দুগিন এবং তার কন্যাকে মস্কোর কাছে একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। যেখানে আলেকজান্ডার বক্তব্য রাখেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, শনিবার রাতে মস্কোর কাছে একটি গ্রামে দাঁড় করানো ছিল দায়িরার ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো গাড়িটি। রাতে একটি অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পর দারিয়া ওই গাড়িতে ওঠামাত্র বিস্ফোরণ ঘটে। এতেই নিহত হন তিনি। দারিয়া দুগিন ছিলেন একজন সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় যে, বিস্ফোরণের পর গাড়িটি দাউদাউ করে জ্বলছে। এমনকি, ওই গাড়িটির কাছে থাকা একটি ট্রাকেও আগুন ধরে যায়। পরে অন্য একটি গাড়ি করে ঘটনাস্থল ছেড়ে যান আলেকজান্ডার দুগিন।

সূত্র: মস্কো টাইমস, এপি

Comments