যাদুকাটা নদীর পাড় ও আশপাশ এলাকায় বালু-পাথর উত্তোলনের মহোৎসব

প্রকাশিত: ৭:২৪ অপরাহ্ণ, মে ২, ২০১৯

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত তাহিরপুর উপজেলার রুপের রানী যাদুকাটা নদী এক সময় ছিলো পর্যটকদের ব্যাপক আনাগোনা।

কিন্তু কালের আর্বতে দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী চক্র প্রকাশ্যে দিনদুপুুরে প্রশাসনের চোখের সামনে কোন অনুমতি ছাড়াই এই নদীটিকে দখল করে নিয়েছে।

প্রতিদিন তারা এই অপরুপ সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি প্রাকৃতিকভাবে ও ভারত থেকে আসা বালু পাথর সমৃদ্ধ যাদুকাটা নদীতে চলছে অবৈধভাবে শতাধিক ড্রেজার ও বোমা মেশিন দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলনের মহোৎসব। ফলে একদিকে যেমন প্রকৃতির উপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে অন্যদিকে প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ ধবংস হতে চলেছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায় খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে এই চক্রটি উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের, মোাদেরগাঁও এলাকায় নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলনের সময় তাহিরপুর থানার এ এস আই মোঃ মণিরের নেতৃত্বে পুলিশী অভিযানে ২টি স্ট্রীলবডি নৌকা আটক করা হয়।

আটককৃত ১টি নৌকার মালিক হলেন মোদেরগাঁও গ্রামের মৃত জামাল মিয়ার ছেলে সালেক মিয়ার (মামুন নৌকা ) ও একই গ্রামের আব্দুর রউফ এর ছেলে রমজান মিয়ার নৌকা। তবে পুলিশ বলছে তারা অভিযান চালিয়ে ১টি নৌকাকে আটক করেছে।

বালু ও পাথর ভর্তি অসংখ্য ট্রলার

জানা যায়, চক্রটি প্রায় ৬০/৭০টি (৭ শত ফুট ) ধারন ক্ষমতার বালু ও পাথর বহনকারী স্ট্রীলবডি নৌকায় বালু বোঝাই করে মিয়ারচর এলাকায় নিয়ে আনলোড করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

পর্যটন এলাকা হিসেবে খ্যাত রুপের রানী যাদুকাটায় যেখানে প্রতিদিন শত শত পর্যটকদের আনাগোনা ছিলো এখন সেখানে পর্যটকদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে।

দীর্ঘদিন ধরে নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলনের সাথে সম্পৃত্ত মোদেরগাঁও গ্রামের মুক্তার মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া তার সহোদর রব্বানী মিয়া, আব্দুর রহিমের ছেলে জুনেদ মিয়া, জাবেদ আলীর ছেলে রতন মিয়া, তার সহোদর এসাস মিয়া, লতিফ মিয়া, জামাল উদ্দিনের ছেলে সালেক মিয়া, লায়েক মিয়ার ছেলে মোঃ কামাল মিয়া, ফয়সল মিয়ার ছেলে মণির মিয়া ও একই গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে জুই মিয়া গংরা।

তারা প্রশাসনের চোখ ফাকিঁ দিয়ে দিনদুপুরে নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করে নিয়ে গেলেও তা বন্ধে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় শংঙ্কিত হাওরপাড়ে নদী তীরবর্তী গ্রামের লোকজন। তাদের অভিযোগ এই চক্রটি স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়াং তাদের ভয়ে কেহ মুখ খুলতে রাজি নন।

তবে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এভাবে যদি নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকে তাহলে তাদের বসতভিটা সবকিছু অল্পদিনে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানার এ এস আই মোঃ মণির হোসেন পুলিশী অভিযানে একটি স্ট্রীলবডি নৌকা আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, যে কেউ অবৈধভাবে নদীর পাড় কেটে বালু ও পাথর উত্তোলনের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে উধভর্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলার নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ ইমতিয়াজ জানান, আমি একটি ট্রেনিংয়ে ঢাকায় যাচ্ছি তবে আমাদের উপজেলা এসিল্যান্ড ও তহশীলদারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। কেউ অবৈধভাবে নদীর পাড় কেটে কিংবা লাউড়েরগড় এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলনের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

/আরএ

Comments