৯০ কোটি টাকার বই বিক্রির মাধ্যমে পর্দা নামলো অমর একুশে গ্রন্থমেলার

প্রকাশিত: ৫:৫২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮

একুশ নিউজ : এ বছরের মতো পর্দা নামলো অমর একুশে গ্রন্থমেলার। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ছিল মেলার শেষদিন। প্রতিদিনের মতো এদিনও বিকাল ৩টা থেকে মেলা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। সন্ধ্যা ৬টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘এবারের বইমেলা ৯০ কোটি টাকার বই বিক্রির মাধ্যমে শেষ হলো । এবার সার্বিক অর্থেই সর্বাঙ্গ সুন্দর একটি মেলা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের সাংস্কৃতিক জাগরণ যে বেগবান হচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।’

বাংলা একাডেমির চত্তরে প্রতি বছর এ মেলা অনুষ্ঠিত হয় বাংলাভাষা প্রেমিকদের মিলন-মেলা হিসেবে ।

তবে গত কয়েক বছর যাবত এমেলা বাংলা একাডেমির চত্তর ছেড়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিস্তৃত হয়েছে এবং ক্রেতা- বিক্রেতার জন্য বারতি সুবিধাও হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্তটি যে সঠিক ছিল, তা এবারের মেলাতেও প্রমাণিত হয়েছে। এ বছরের ভুলত্রুটিগুলো হয়তো আগামী মেলায় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’

এবারের মেলায় শিশু ও অভিভাবকসহ ক্রেতা-দর্শনার্থীর আগমন ছিল বিশেষভাবে লক্ষণীয়। এক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বইমেলা আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বলেন, ‘গতকাল ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্টল মালিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং আজকের সম্ভাব্য বিক্রি যুক্ত করলে বলা যায়, এবার বইমেলায় ৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। এছাড়া, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত বাংলা একাডেমি এক কোটি ৫১ লাখ ২৪ হাজার টাকার বই বিক্রি করেছে। শেষদিনেও বইমেলায় নতুন বই এসেছে ২৫৫টি। মেলায় নতুন বই এসেছে চার হাজার ৫৯১টি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. ইব্রাহীম হোসেন খান বলেন, ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা পৃথিবীর অন্যতম বইমেলা। প্রযুক্তির এই যুগে পাঠক যে বই থেকে মুখ ফিরিয়ে নেননি, এটা অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক।’

সভাপতির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষা স্তরে বাংলায় পাঠ্যপুস্তক কম প্রকাশিত হয়। এ ধরনের বই আরও প্রকাশিত হওয়া জরুরি।’

এর আগে বিকাল ৪টায় মেলার মূল মঞ্চে ছিল বাংলাদেশের নৃগোষ্ঠী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। সেখানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাহমান নাসির উদ্দিন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী এবং রণজিত সিংহ। সভাপতিত্ব করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রাশিদ আসকারী।

সভাপতির বক্তব্যে রাশিদ আসকারী বলেন, ‘নৃগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নতকরণ যেমন জরুরি, তেমনি তাদের আদি ভাষা-সংস্কৃতি ইত্যাদি সুরক্ষার নিশ্চয়তা বিধানও আমাদের দায়িত্ব।’

এ বইমেলার জন্য আমাদের আবারো এক বছর অপেক্ষা করতে হবে।

শেখ রাবিম

 

Comments