শিগরিরই ঢাকসু নির্বাচন : ঢাবি ভিসি

প্রকাশিত: ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাবি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। আগামী বছরের মার্চ মাসে এ নির্বাচন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

হাইকোর্টের নির্দেশের পরও ডাকসু নির্বাচনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় উপাচার্য আখতারুজ্জামানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার পাঁচ দিনের মাথায় রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।

বৈঠক শেষে উপাচার্য আখতারুজ্জামান জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ডাকসু নির্বাচনের চিন্তা করা হচ্ছে। আগামী বছরের মার্চ মাসে এটি করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

উপাচার্যের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দীন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানীসহ হল প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (দুটি অংশ) নেতারা।

হাইকোর্টের নির্দেশের পরও ডাকসুর নির্বাচনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, রেজিস্ট্রার এনামউজ্জামান ও ট্রেজারার কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে গত বুধবার সংশ্লিষ্ট শাখায় মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

এর পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনার জন্য প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ছাত্র সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর পাঠানো হয়। সে ধারাবাহিকতায় আজ বৈঠক হয়।

ডাকসুর বিধান অনুযায়ী প্রতি বছর নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু প্রায় ২৮ বছর আগে ১৯৯০ সালের ৬ জুলাই ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন হয়। সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পর আর ডাকসু নির্বাচন হয়নি। এরপর প্রতিটি রাজনৈতিক সরকার এই নির্বাচনের আশ্বাস দিলেও আর ভোট হয়নি।

কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চা নেই বলে মনে করা হয়। এতে মূলধারার রাজনীতিতে যেমন নতুন নেতা তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি ছাত্র সংগঠনগুলোও শিক্ষার্থীদের অধিকারের প্রতি উদাসীন হয়ে স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠছে বলেও নানা সময় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলে আসছেন।

ডাকসু নির্বাচন চেয়ে নানা সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা কর্মসূচিও পালিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গত সমাবর্তনে এই নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেন আচার্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদও। কিন্তু এরপরেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

২০১২ সালের ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১ শিক্ষার্থীর পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর ও ট্রেজারারকে লিগ্যাল নোটিশ দেন মনজিল মোরসেদ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই নোটিশের কোনো জবাব না দেওয়ায় ২০১২ সালে ২৫ শিক্ষার্থীর পক্ষে রিট আবেদন করা হয়।

এরপর একই বছরের ৮ এপ্রিল হাইকোর্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করার ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।

রিটে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরকে বিবাদী করা হয়।

পরে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ৬ মাসের মধ্যে করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এছাড়া, ডাকসু নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

#এএইচ

Comments