শাহবাগ থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিল পুলিশ

প্রকাশিত: ৯:৪২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০১৮

একুশ নিউজ ডেস্ক : সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবির কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও টিয়ারশেল ছুড়ে সরিয়ে দিয়েছে ‍পুলিশ। শাহবাগ মোড়ে সাড়ে চার ঘণ্টা অবরোধের পর লাঠিপেটা, টিয়ার শেল মেরে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। রাত ৮টার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় কর্তব্যরত সাংবাদিকদের কয়েকজন লাঠিপেটার শিকার হন।

আজ রোববার বিকেল ৩টার দিকে পাঁচ দফা দাবিতে অবরোধ শুরু করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এ সময় শাহবাগের চারদিকে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যা ৭টা ৫০ এর দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় লাঠিপেটাও শুরু করে পুলিশ। একই সঙ্গে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফাঁকা হয়ে যায় শাহবাগের মোড়। ধাওয়া দিয়ে কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের কারণে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ থেকে সরে এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও চারুকলা অনুষদের সামনে অবস্থান নেয়। চারুকলার সামনে কাঁদানে গ্যাস থেকে রক্ষা পেতে আন্দোলনকারীরা আগুন জ্বালায়। পরে তারা মিছিল সহকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলে আসেন।

এর আগে বিকেলে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পেলে আমরা আন্দোলন থামিয়ে রাস্তা ছাড়ব না।’ তিনি আরো বলেন, ‘কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস ছাড়া আমরা রাস্তা ছাড়ব না। আমরা আন্দোলন করছি কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আশ্বাস আমরা পাচ্ছি না। আমরা আমাদের দাবি আদায় করে ঘরে ফিরতে চাই।’


কোটা পদ্ধতির সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবির কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা

এদিকে, হামলার পরে আন্দোলনকারীরা ঢাবির টিএসসি আসলে সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ রাশেদ খানসহ কয়েকজনের ওপর হামলা করেন। হামলার বিষয়ে আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন বলেন, পুলিশ তাদের ওপর হামলা করেছে ও কয়েকজনকে আটক করেছে।  হামলায় তাদের অন্তত ১০০জন কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। হামলার প্রতিবাদে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

রবিবার দুপুর ২টায় ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ এর ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হয় আন্দোলনকারীরা। অন্তত পাঁচ হাজার আন্দোলনকারী পদযাত্রা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।

আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড বহন করে। এতে লেখা ছিল-১০ শতাংশের বেশি কোটা নয়, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কোটা বৈষম্যের ঠাঁই নাই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বৈষম্য থাকবে না, জেগেছে তরুণ জেগেছে দেশ কোটা মুক্ত বাংলাদেশ, কোটা প্রথা নিপাত যাক মেধাবীরা মুক্তি পাক ইত্যাদি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন বলেন, অবিলম্বে সরকারি চাকরিসহ সকল ধরনের চাকরিতে কোটা প্রথার সংস্কার করতে হবে। কোটা প্রথার সংস্কার ছাড়া আন্দোলনকারীরা রাজপথ ছাড়বে না।

কোটা সংস্কারকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে- সরকারি নিয়োগে কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, কোটার যোগ্য প্রার্থী না পেলে শূন্যপদে মেধায় নিয়োগ, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অভিন্ন বয়সসীমা, নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার না করা।

তবে রাত ৮টার দিকেই শাহবাগ ছাড়তে হয় আন্দোলনকারীদের। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশের ধাওয়া চলছিল। যান চলাচল এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক হয়নি।

/এসআর

Comments