রোনালদোর শেষ দিকের গোলে হার এড়ালো রিয়াল

প্রকাশিত: ২:২৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০১৮

স্পোর্টস নিউজ: এ যেন দুইরকম রিয়াল মাদ্রিদকে দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ওঠা দলটি লিগের মধ্যম সারির দল অ্যাথলেটিক বিলবাওর বিপক্ষে জিততেই পারলো না।

তবে হারেওনি জিদানের দল। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর শেষ দিকের গোলে হার এড়ালো জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। ১-১ গোলের এক অস্বস্তিকর এক ড্রয়ে ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগও হাতছাড়া করলো রিয়াল। এ ড্র’র ফলে ৩৩ ম্যাচে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তিন নম্বরে বর্তমান চ্যাম্পিয়ান রিয়াল মাদ্রিদ। দিনের অন্য ম্যাচে গেতাফের কাছে ২-১ গোলে হেরে যাওয়া ভ্যালেন্সিয়া ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে চতুর্থ স্থানে। ৮৩ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে বার্সেলোনা। আর রিয়ালের এই পয়েন্ট ভাগাভাগি এমন একটা দলের সাথে হল যে দলটা বার্নাব্যুতে শেষ ১২ ম্যাচের প্রতিটিতেই হেরেছে যেখানে গোল খেয়েছে ৪৪টি।

বিলবাওর বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মৌসুমের ১১টি ম্যাচে কোনো জয় পায়নি রিয়াল। ১৮ বছরের ভেতর এটিই ঘরের মাঠে রিয়ালের সবথেকে বাজে ফর্ম। লা লিগাতেও রিয়ালে অবস্থা নড়বড়ে। এক ম্যাচ বিশ্রাম নিয়েই এদিন রিয়াল একাদশে ফিরেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে জিনেদিন জিদানের দল। ৭ মিনিটে বিলবাওর ইতুরাপাসের শট রুখে দেন রিয়াল গোলকিপার নাভাস। ৯ মিনিটে কার্ভাহালের শটে রোনালদো হেড করলে গোলকিপার পরাস্ত হলেও গোলবারকে পরাস্ত করতে পারেননি বিলবাওর বিপক্ষে ১৭ ম্যাচে ১৬ গোল করা রোনালদো। ১১ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পায় রিয়াল। এবার আসেনসিওর শট রুখে দেন বিলবাওর গোলকিপার কেপা।

কেপা যেন একাই চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রিয়ালের আক্রমণভাগের সামনে। রিয়াল ফুটবলারদের একের পর এক আক্রমণ একাই প্রতিহত করতে থাকেন তিনি। পুরো ম্যাচে খেলেছেন আসলে রোনালদো-বেনজেমা-মার্সেলো-রামোস-অ্যাসেনসিও-ভাসকেজরাই। কিন্তু গোলেরই দেখা পাচ্ছিলেন না। ফুটবল যে গোলেরই খেলা। তবে এদিন রিয়ালের মাঠে ১৩তম মিনিটে এগিয়ে যায় বিলবাও। ১৪ মিনিটে স্রোতের বিপরীতে অসাধারণ এক কাউন্টার এটাক থেকে গোল করে বসেন বিলবাওর ইনাকি উইলিয়ামস। ইনিগো কর্দোবার ডিফেন্স চেরা পাস খুঁজে পায় ইনাকি উইলিয়ামসকে। এগিয়ে আসা গোলরক্ষক কেইলর নাভাসের উপর দিয়ে বল জালে পাঠান তিনি।

গোল খেয়েই যেন আরো আক্রমণাত্মক হয়ে খেলতে থাকে রিয়াল। ১৯ মিনিটে মার্সেলোর বা পায়ের দূরপাল্লার শট অসাধারণ দক্ষতায় তালুবন্দী করেন কেপা। ৩৭ মিনিটে আবারো রিয়ালের সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান কেপা। এবার ভাস্কুয়েজের শট রুখে দেন তিনি। কেপা প্রথমার্ধের সব থেকে দুর্দান্ত সেভটি করেন ম্যাচের ৪৪ মিনিটে। তিনজন খেলোয়াড়কে ফাঁকি দিয়ে আসেনসিওর বা পায়ের শট রুখে দিয়ে বিলবাওকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখেন কেপা। ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় রোনালদোরা।

বিরতি থেকে ফিরেও চলে রিয়াল খেলোয়াড়দের আধিপত্য। বল নিজেদের দখলে নিয়ে খেলতে থাকলেও পরিকল্পিত কোনো আক্রমণই করতে পারছিল না জিদানের দল। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সব থেকে সহজ সুযোগটি হাতছাড়া করেন বিলবাওর গোলকিপার। তিন দফায় সুযোগ পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেননি বিলবাওর খেলোয়াড়রা। দে মার্কসের বারানো বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি কেউ। সেই বলে কর্ডোবা শট নিলেও ব্লক করেন কার্ভাহাল, ফিরতি বলে গার্সিয়ার শট গোলবারে লেগে ফিরে আসলে গোলবঞ্চিত হয় বিলবাও।

ম্যাচের একদম অন্তিম মুহূর্তে আবারো রিয়াল মাদ্রিদের ত্রাতা হিসেবে হাজির হন রোনালদো। বিলবাও যখন জয়ের সুভাস পাচ্ছে, ঠিক তখনই জ্বলে ওঠেন রোনালদো। ৮৭তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের মদ্রিচের দূরপাল্লার শটে অসাধারণ এক ব্যাকহিলের মাধ্যমে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান পর্তুগিজ এই স্ট্রাইকার। শেষ ১২ ম্যাচে এটি রোনালদোর ২২তম গোল। ১-১ গোলের সমতায় থেকেই ম্যাচ অস্বস্তির এক ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। এই ড্রয়ে ৩৩ ম্যাচে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগের ৩য় স্থানেই রইল রিয়াল মাদ্রিদ।

/এসআর

Comments