মির্জাপুরে ১০টি পাকা ব্রিজ উন্নয়ন এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে মাইল ফলক

প্রকাশিত: ৭:২৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০১৮

তুষার সান্যাল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বংশাই-লৌহজং নদীর উপর নির্মিত ১০টি পাকা ব্রিজ এলাকার উন্নয়ন এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক মাইল ফলক সৃষ্টি করেছে।

মির্জাপুরবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবী পুরন হওয়ায় অবহেলিত ও দুর্গম এলাকার জনসাধারন তাদের আনন্দ উচ্ছাসের কথা জানিয়েছেন।

মির্জাপুর উপজেলার কয়েকটি এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ব্রিজগুলো সমাপ্ত হওয়ায় এলাকার লোকজন অতিসহজেই উপজেলা সদর ও জেলা সদরের সঙ্গে যানবাহনসহ বিভিন্ন পন্ন নিয়ে যাতায়াত করছেন।

জানা যায়, মির্জাপুর উপজেলা রাজধানী ঢাকার সন্নিকটে হলেও এক সময় উপজেলা ছিল যোগাযোগের ক্ষেত্রে খুবই অবহেলিত। একটি পৌরসভা ও মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাওড়া, বহুরিয়া, ভাদগ্রাম, লতিফপুর, গোড়াই, আজগানা, তরফপুর এবং বাঁশতৈল এই ১৪ ইউনিয়ন নিয়ে ১৪৭ দশমিক ৪০ বর্গ কি.মি. এলাকা নিয়ে মির্জাপুর উপজেলা গঠিত।

উত্তরে বংশাই ও দক্ষিনে লৌহজং থাকায় দুর্গম এলাকার জনসাধারন সরাসরি যোগাযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। দুটি নদীর উপর পাকা ব্রিজ ও দুই পাশে পাকা সড়ক নির্মান না হওয়ায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে এলাকাবাসির দুর্ভোগের শেষ ছিলো না।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনের সংসদ সদস্য ও সড়ক পরিবহন এবং সেতু মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ মো. একাব্বর হোসেনের প্রচেষ্টায় গুরুত্বপুর্ন পয়েন্টে ১০ টি ব্রিজ নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেন।

মির্জাপুরের রাস্তাঘাট ও ব্রিজ কালভাটের উন্নয়নসহ বিভিন্ন দাবী নিয়ে তিনি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী মো. ওবায়দুল কাদেরসহ এলজিইডি, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সচিব ও প্রকৌশলীদের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে অগ্রাধিকার প্রকল্পের
মাধ্যমে বংশাই ও লৌহজং নদীর উপর পাকা ব্রিজ ও পাকা রাস্তা নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেন।

গত ১০ বছরের ব্যবধানে বংশাই ও লৌহজং নদীর উপর অন্তত ১০টি গুরুত্বপুর্ন ব্রিজ নির্মানসহ শতাধিক পাকা রাস্তা হওয়ায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক মাইল ফলক সৃষ্টি হয়েছে বলে লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন, বহুরিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং হংকং শাখার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি শিল্পপতি মো. আবুল কালাম আজাদ লিটন ও ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফ জানিয়েছেন।

উল্লেখযোগ্য ব্রিজগুলোর মধ্যে রয়েছে, মির্জাপুর-পাথরঘাটা রোডে বংশাই নদীর উপর ১৩ কোটি টাকা ব্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ একাব্বর হোসেন ৩০০শ মিটার পাকা ব্রিজ, সোহাগপাড়া-লতিফপুর রোডে বংশাই নদীর উপর ১২ কোটি টাকা ব্যায়ে চান্দুলিয়া ৩৫০ মিটার পাকা ব্রিজ, গোড়াই-সখীপুর রোডে হাটুভাঙ্গা এলাকায় ৯ কোটি টাকা ব্যায়ে ২৫০ মিটার পাকা ব্রিজ, কুরনী-ফতেপুর রোডের থলাপাড়া এলাকায় ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৫০ মিটার পাকা ব্রিজ, ফতেপুর-বাসাইল রোডে পারদিঘিী এলাকায় ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৫০ মিটার পাকা ব্রিজ, দেওহাটা-গেরামারা রোডে লৌহজং নদীর উপর বহুরিয়া এলাকায় ৬ কোটি টাকা ১৫০ মিটার বীর মুক্তিযোদ্ধ নুরুল ইসলাম ব্রিজ, মির্জাপুর-ভাওড়া-কামারপাড়া রোডে পাহাড়পুর এলাকায় ৪ কোটি টাকা ব্যায়ে ১০০ মিটার পাকা ব্রিজ, ওয়ার্শি-বালিয়া-ধামরাই রোডে পুষ্টকামুরী এলাকায় ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ১০০শ মিটার পাকা ব্রিজ, কদিধল্যা-বরাটি রোডে ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে বাবু দুঃখীরাম রাজবংশী ১০০শ মিটার পাকা ব্রিজ ও পাকুল্যা-লাউহাটি রোডে ৭ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৫০ মিটার গুনটিয়া ব্রিজ।

এছাড়া গ্রামীন পাকা সড়কের উপর বিভিন্ন ছোট বড় নদী ও খালের উপর অন্তত শতাধিক ব্রিজ কালভার্ট নির্মিত হয়েছে এবং বেশ কিছু ব্রিজ নির্মানের কাজ এখনও চলমান ও প্রক্রিয়াধীন বলে উপজেলা প্রকৌশল অফিস সুত্র জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্রিজ নির্মানের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সড়ক পরিবহন এবং সেতু মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. একাব্বর হোসেনের প্রচেষ্টায় মির্জাপুরে ব্রিজ কালভাটসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

কিছু বিজ্র ও রাস্তা ঘাট উন্নয়নের কাজ এখনও চলমান রয়েছে। এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য ও সড়ক পরিবহন এবং সেতু মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. একাব্বর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এলাকার জনগন আমাকে নির্বাচিত করেছেন সুষম উন্নয়নের জন্য।

এলাকার যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা ও মাদক মুক্ত সমাজ গঠনসহ সুষম উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।

/আরএ

Comments