বিনামূল্যে অস্ত্রোপচার করলেন মানবিক চিকিৎসক নিকুঞ্জ বিহারী

প্রকাশিত: ১০:০৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০২২
বিল্লাল হোসেন,যশোর প্রতিনিধি : সালমা খাতুন (৩০)। জরায়ুর সমস্যা নিয়ে ৭ বছর ধরে যন্ত্রনায় ভুগছিলেন। অনেক চিকিৎসকের পরামর্শে দীর্ঘদিন ওষুধ সেবন করেও কোন কাজের কাজ হয়নি। সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলেও চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার না করে তাকে ফেরত পাঠান। সমস্যা প্রকট হলেও অর্থের অভাবে বেসরকারি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বরনাপন্ন হতে পারছিলেন না। কিন্তু যশোরের মানবিক চিকিৎসক গাইনী বিভাগের অধ্যাপক নিকুঞ্জ বিহারী গোলদারের বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারে সাত বছরের যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেলেন সালমা। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের আন্তরিকতায়রোগীর স্বজনেরা চরম খুশি হয়েছেন।  সালমা খাতুন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের আতিয়ার রহমানের মেয়ে ও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার আমড়াগাছি ইউনিয়নের ভগলপাতি গ্রামের শুকুর আলীর স্ত্রী।

সালমা খতুন জানান, তার জরায়ুতে সমস্যার কারণে অনেক যন্ত্রনা হতো। অনেক চিকিৎসকের কাছে ছুটেছি। বছরের পর বছর ওষুধ খেয়েও যন্ত্রনা কমেনি। এরই মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হন তার জরায়ুতে বড় ধরনের টিউমার হয়েছে। অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। অর্থের অভাবে সঠিক চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার না করে ওষুধ লিখে বাড়িতে পাঠান। দীর্ঘদিন ওষুধ খেয়েও কোন কাজের কাজ হয়নি। বরং দিনে দিনে যন্ত্রনা বাড়তে থাকে।

আতিয়ার রহমান জানান, তার মেয়ে সালমা খাতুনের বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা মানেই অনেক টাকা খরচ। কিন্তু এতো টাকা খরচ করার সামর্থ্য তাদের ছিলো না। যে কারণে তারা চরম হতাশার মধ্যে ছিলেন। এই অবস্থায় এক নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ হয় গাইনী বিভাগের প্রফেসর ডা. নিকুঞ্জ বিহারী গোলদারের সাথে।  তাদের আর্থিক অবস্থার কথা শুনে রোগীর ফ্রি অস্ত্রোপচারের উদ্যোগ নেন তিনি। গত মঙ্গলবার  যশোর শহরের কিংস হসপিটালে ডা. নিকুঞ্জ বিহারী গোলদার বিনামূল্যে রোগীর (সালমা) জরায়ুর ( হিস্টেরেক্টমি) অস্ত্রোপচার করেন। বেসরকারি হসপিটালে ব্যয়বহুল এই অস্ত্রোপচার বিনামূল্যে করাতে পেরে ওই চিকিৎসকের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন আতিয়ার রহমান।

রোগী সালমা খাতুন বলেন, চিকিৎসক বিনামূল্যে অস্ত্রোপচার না করলে জানিনা এই যন্ত্রনা আরও কত বছর ভোগ করতে হতো। ডা. নিকুঞ্জ বিহারী গোলদার তাকে ফ্রি অস্ত্রোপচার করে একজন আদর্শ ও মানবিক চিকিৎসকের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ।

গাইনী বিভাগের অধ্যাপক ডা. নিকুঞ্জ বিহারী গোলদার জানান, অর্থের অভাবে মানুষ শারীরিক যন্ত্রনায় ভুগবে এটা অত্যান্ত কষ্টদায়ক। সালমা খাতুনের ফ্রি অস্ত্রোপচার করে তিনি মানসিকভাবে তৃপ্তি পেয়েছেন। বাকিটা জীবন এভাবে তিনি মানুষের সেবা করে যেতে চান।

Comments