ভারতের পক্ষে কথা বলার অধিকার তাকে কেউ দেয়নি: কাদেরকে ফখরুল

প্রকাশিত: ১০:১৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০১৮

স্টাফ রিপোর্টার: ভারত থেকে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য জনমনে প্রশ্ন তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ভারতের পক্ষে কথা বলার অধিকার কে দিয়েছে- প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য আন্তজাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা বড় সমস্যার সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, ভারতের পক্ষে কথা বলার অধিকার তাকে কেউ দেয়নি। এটা গোটা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত বৌদ্ধ নাগরিক আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ক’দিন আগে আওয়ামী লীগের ১৯ জনের একটি টিম গিয়েছিল ভারতে সেই দেশের ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সাথে সাক্ষাত করার জন্য। খু্ব ভাল কথা। আমরা এই ধরনের সফরকে সব সময় স্বাগত জানাই। কারণ এতে করে দু’দেশের মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সু-সম্পর্ক তৈরি হয়। আমিও তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে কিছুদিন আগে চীনে গিয়েছিলাম।

কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতারা ভারত থেকে এসে কী বললেন? তারা বললেন- ভারত বলেছে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে ভারত ইন্টার ফেয়ার করবে না। কথাটার অর্থ কি? কেউ কি বলেছে ভারত বাংলাদেশের নির্বাচনে ইন্টার ফেয়ার করবে? ওনাকে (ওবায়দুল কাদের) কি ভারত দায়িত্ব দিয়েছে এ কথাটি বলার জন্য। এটা আমরা এখনও পর্যন্ত বুঝতে পারছি না- তিনি কার কাছে থেকে এ দায়িত্ব পেলেন? তাকে কে দিল এই অধিকার?’

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘আমরা সবসময় মনে করি ভারত আমাদের সবচেয়ে নিকটতম বন্ধু রাষ্ট্র। মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকার কথা আমরা সবসময় শ্রদ্ধার সাথে স্বীকার করি। তাদের সাথে বাংলাদেশের সু-সম্পর্ক থাকুক এটা আমরা সবসময় চাই’।

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত ও কর্মক্ষম আছেন, ততদিন পর্যন্ত তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে’ আওয়ামী লীগ নেতা হানিফের এমন বক্তব্য উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজীবন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক। আমরাও তাতে খুশি হবো। কিন্তু জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসুক। গণরায় ছাড়া তো বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না।’

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘জনগণকে নিয়ে আপনারা ক্ষমতায় আসুন, জনগণ ভোট দিক আপনাদেরকে। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আপনারা ক্ষমতায় আসুন আমাদের কারও আপত্তি নেই। তাহলে কেন, কী কারণে আপনারা দেশনেত্রীকে আটকে রেখেছেন? কী অপরাধ তাঁর? একটা মিথ্যা, সাজানো, বানোয়াট মামলা দিয়েছেন তাঁর নামে।’

তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘আমার তো কিছু বলার দরকার নেই। ডিজিই তো সব বলে দিয়েছেন। আপনারা বারবার কেন এই বিষয়টি সামনে নিয়ে আসছেন আমি বুঝতে পারছি না। ইট ইজ এ ডেথ ইস্যু। এটা নিয়ে এখন আর কথা বলার কিছু নেই।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘দেশে এখন গণতন্ত্র নেই। আজকের এই সরকার বিনাভোটের সরকার। মানুষ তাদের কাছে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চায়। বিচার বিভাগকে তারা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষ এখন কার কাছে যাবে, কোথায় যাবে? এই ফ্যাসবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে পরাজিত করতে হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক দিলীপ কুমার বড়ুয়ার সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড.সুকোল বড়ুয়া, সাবেক মন্ত্রী গৌতম চক্রবর্তী, বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক বাবু দীপেন্দ নাথ, নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন মো: জসিম ও সুশীল বড়ুয়া প্রমুখ।

/এমএম

Comments