বিজিএমইএ-এর মুচলেকায় অস্পষ্টতা, আদেশ ২ এপ্রিল

প্রকাশিত: ৬:২০ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০১৮

একুশ ডেস্ক : সৌন্দর্যমণ্ডিত হাতিরঝিল প্রকল্পে বিজিএমইএ ভবনকে‘একটি ক্যান্সার’ বলেছে হাই কোর্ট । অবৈধভাবে গড়ে তোলা ভবন ভাঙার বিষয়ে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর দেওয়া মুচলেকায় অস্পষ্টতা থাকায় তা পরিমার্জন করে আগামী সোমবার আবার দাখিল করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আজ বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে শেষ বারের মতো এক বছরের সময় চেয়ে লিখিত মুচলেকা দেন বিজিএমইএর বর্তমান পরিচালনা পরিষদ। লিখিত মুচলেকায় বলা হয়, এরপর আমরা আর সময় চাইব না।

আদালতে বিজিএমইএর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী; তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম। রিটের পক্ষে ছিলেন এ মামলায় হাইকোর্টের অ্যামিকাস কিউরি অ্যাডভোকেট মঞ্জিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এর আগে মঙ্গলবার আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করে বিজিএমইএর আইনজীবীকে বলেন, ভবন কতদিনের মধ্যে ভাঙবেন, সে বিষয়ে মুচলেকা দিতে হবে। অন্যথায় কোনো সময় আবেদন গ্রহণ করা হবে না। বারবার সময় আবেদন করেন। এতে আমাদেরই লজ্জা লাগে। পরে আদালত বলেন, সময় আবেদনের বিষয়ে মুচলেকা দেয়ার পরেই আদেশ দেয়া হবে।

“আরেকটা বিষয় হল, মুচলেকায় বলা হয়েছে নির্ধারিত সময়ের পর তারা ভবন ছেড়ে দেবে। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা ছিল ৯০ দিনের মধ্যে ভবনটি ভাঙতে হবে। সে বিষয়েও ব্যাখ্যা নেই। আদালত এসব নিয়ে প্রশ্ন তুললে বিজিএমইএ- এর পক্ষ থেকে নতুন করে মুচলেকা দেওয়ার কথা বলেন তাদের আইনজীবী।”

মনজিল মোরসেদ বলেন, ওই মুচলেকায় বলা থাকবে বিজিএমইএ আর সময় চাইবে না। সময় শেষ হওয়ার পর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিজিএমইএ নিজেরাই ভবন ভাঙবে। আদেশ না মানলে বিজিএমইএ দায়ী থাকবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ অক্টোবর বহুতল ভবন ভাঙতে বিজিএমইএকে সাত মাস সময় দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলের রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেন বিজিএমইএকে। হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সালের ২ জুন তা খারিজ হয়ে যায়।

পরে একই বছরের ৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত রায় প্রকাশিত হওয়ার পর রিভিউ আবেদন জানায় বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ৫ মার্চ বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে কতো সময় লাগবে- তা ৯ মার্চের মধ্যে আদালতে আবেদন করতে বলেছিলেন আপিল বিভাগ। ওইদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে ভবন ভাঙার রায় বহাল ও ভবন ভাঙতে গত বছর ১২ মার্চ ভবন ভাঙতে বিজিএমইএকে ছয়মাসের সময় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।

/এসআর

Comments