বশেমুরবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ববিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ৭:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯

মোঃআহাদুল ইসলাম অরিক
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) এর সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে বাংলা বিভাগের প্রভাষক উন্মেষ রয় ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোঃ সোহেল রানা উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক উন্মেষ রায় বলেন, একজন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে থেকে কতটুকু অনৈতিক ও অশিষ্টাচার হলে শিক্ষার্থীদের উপর ভাড়াটিয়া গোন্ডা বাহিনীকে লেলিয়ে দেয়। অপরাধ আড়াল করতেই এতদিন নাটকীয়তার আশ্রয় গ্রহণ করেছেন উপাচার্য। প্রতিনিয়ত শিক্ষাথীদের মুক্ত স্বাধীনতাকে ব্যাহত করেছেন। প্রশাসনের অপকর্মগুলো প্রকাশ করা হলেই শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়। অনতিবিলম্বেস বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্যকে প্রত‍্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে নেবার এবং শিক্ষার্থীদের উপর বর্বরোচিত হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব‍্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বশেমুরবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, কোন স্বৈরাচারীর স্থান বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমির মত জায়গায় হতে পারে না। তাদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। আমরা তাদের এই যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি। অবিলম্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কে এই দাবি মেনে নেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী লোকমান হোসাইন বলেন, বশেমুরবিপ্রবির আন্দোলনরত ভাই-বোনদের উপর উপাচার্যের পেটোয়া ও গুন্ডা বাহিনীর ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। এমন কার্যক্রমের জন্য আমরা উপাচার্যকে সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করতে বাধ্য হলাম। আমরা মনে করি শিক্ষার্থীরা তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ার কাহিনী প্রচার করার জন্যই সচেতন শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগতদের দ্বারা হামলা চালান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ও রাষ্ট্রপতির কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ বশেমুরবিপ্রবির বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দুর্নীতি ও অপকর্ম রোধ করার জন্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার জন‍্য উপাচার্যকে অপসারণ করার দাবি জানাচ্ছি।

এ ছাড়া ও ববির সাংবাদিকবৃন্দরাও এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, এই হামলা শুধুমাত্র বশেমুরবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের উপর নয়, সমগ্র দেশের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের উপর হামলা। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। বশেমুরবিপ্রবির প্রশাসন যদি এই হামলার দ্রুত বিচার করতে না তাইলে সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। সেই সাথে তারা এই আন্দোলন কে ন্যায্য দাবি করে আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন।

উল্লেখ্য,গত ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয় প্রশাসন। তবে বৃহস্পতিবার থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ভিসির অপসারণের জন্য বিক্ষোভ করছেন, তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মচারীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি, এবং ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর মুরাল নির্মাণসহ উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। আন্দোলনের মুখে শনিবার থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা নির্দেশ উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ আর এজন্যই উপাচার্যের নির্দেশেই বহিরাগতদের দ্বারা এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। যাতে ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

Comments