নিরাপদ সড়ক কবে হবে ?

প্রকাশিত: ৩:২৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০১৮

মুহাম্মদ নোমান ছিদ্দীকী : দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। রোধ হচ্ছে না। প্রতিদিন সড়কে গড়ে নিহত হন ৬৪ জন, বছরে ক্ষতি ৩৪ হাজার কোটি টাকা। চোখের সামনে প্রতিদিনই তরতাজা মানুষগুলো লাশ হয়ে যাচ্ছে। রক্তাক্ত হচ্ছে আমাদের পিচঢালা পথ। এত লাশ বহনে অপারগ হয়ে পড়েছে আমাদের সড়ক-মহাসড়ক গুলো। সব দুর্ঘটনাই দুঃখজনক। সকলের মৃত্যুই আমাদের কষ্ট দেয়। কিন্তু কিছু মৃত্যু আছে যা মনে দোলা দেয়। ভোলা যায় না। হৃদয়ের গভীরে দাগকাটে ।


সোনারগাঁও উপজেলার টিপুরদিতে সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনা সবার দৃষ্টি কেড়েছে। সিডিএম নামের বেপরোয়া গতির পরিবহনটি একটি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালাতে গিয়ে আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে নারী-শিশুসহ ১০ জন মারা প্রাণ হারান। এক লাশের ওপর পড়ে আছে আরেক লাশ। সব ক’টি লাশই ক্ষতবিক্ষত। আহত হয়ে আটকে গিয়ে যে চিৎকারের রোল উঠেছিলো সেদিন প্রত্যক্ষদর্শী সবাইকে তা ব্যথিত করে। প্রশ্ন জাগে, জীবন কি এমনই? এতটাই তুচ্ছ? মানুষের জীবনের কি একদন্ডও নিরাপত্তা নেই? সবই কি মূল্যহীন? তাই যদি হয় তবে সড়কে এত লাশ কেন? হঠাৎ করে দানবীয় গতিতে দু’টি যাত্রীবাহী বাস মাখমুখি হয়। মুহুর্তে ঝড়ে যায় এসব তাজা প্রাণ। একি দুর্ঘটনা না কী হত্যাকাণ্ড!

আমরা মনে করি এসব দুর্ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ, মন্ত্রণালয় তথা সরকার দায়ী। এ ব্যাপারে তারা উদাসীন। একটা সড়ক দুর্ঘটনার জন্য যত ধরনের বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম ও অবহেলা থাকা দরকার, এর সবকিছুই ছিল নারায়ণগঞ্জের টিপুরদীতে। যা দেখার দায়িত্ব ছিলো সংশ্লিষ্টদের। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির চলাচলের ফিটনেস সনদ ছিলো না। আইনে নিষেধ থাকা সত্ত্বেও চালক মুঠোফোনে কথা বলছিলেন এবং বাসচালকের বেপরোয়া গতিতে বাসটি চালাচ্ছিলেন। যার ফল ১০ জন নিরীহ মানুষের প্রাণহানি। নির্দ্বিধায় বলা যায় সংশ্লিষ্টদেরও গাফিলতির কারণেই এ দুর্ঘটনা। এভাবে প্রতি দিন মানুষ মরছে। গড়ে দৈনিক মরছে ৬৪ জন। সারাদেশে খুনখারাবিতেওতো এর দশভাগের একভাগ মরে না। এই ইচ্ছাকৃত মৃত্যুও জন্য কি সরকারের কোন দায় নেই ?

Comments