দুই কেন্দ্রে ইভিএম ও ৩টিতে সিসি ক্যামেরায় অনুষ্ঠিত হবে খুলনা সিটি নির্বাচন

প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ণ, মে ৯, ২০১৮

শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা প্রতিনিধিঃখুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে দুটি ভোটকেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে। ফলে এ দুটি কেন্দ্রের ১০টি বুথের ২ হাজার ৯৭৮ জন ভোটার ইভিএমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। একইসাথে চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ তিনটি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হবে সিসি ক্যামেরা। এ নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৪টি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. ইউনুচ আলী। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে তিনটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।’

নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, এবারের কেসিসি নির্বাচনে নগরীর ২৪ ও ২৭নং ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্রের ভোটাররা ইভিএমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে একটি নগরের ২৪নং ওয়ার্ডের ২০৬ নম্বর সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই কেন্দ্রের চারটি বুথে ইভিএমে ভোট দিতে পারবেন ১ হাজার ৯৯ জন নারী ভোটার। অপরটি নগরের ২৭নং ওয়ার্ডের ২৩৯ নম্বর পিটিআই, জসিম উদ্দিন হোস্টেল (নীচতলা) কেন্দ্রের ছয়টি বুথে ১ হাজার ৮৭৯ জন পুরুষ ভোটার ইভিএমে ভোট দিতে পারবেন।

এদিকে ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৫৪ টিকে ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এর মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এগুলো হলো- নগরের ৬নং ওয়ার্ডের ৩৭ নম্বর সরকারি বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (কলা ভবন) কেন্দ্র, ২২নং ওয়ার্ডের ১৮৩ নম্বর পাইওনিয়ার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় (পশ্চিম পাশ) কেন্দ্র ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের পিটিআই প্রশিক্ষণ ভবন (২য় ও ৩য় তলা) কেন্দ্র।

সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য বিভাগীয় আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটি, মনিটরিং কমিটি, ব্যয় নির্ধারণ কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভোটগ্রহণের জন্য ২৮৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১ হাজার ৫৬১ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ৩ হাজার ১২২ জন পোলিং অফিসারসহ মোট ৫ হাজার ২২১ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় খুলনা সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম নির্বাচন কর্মকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করবেন। তিনি মঙ্গলবার বিকেলে খুলনায় এসেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একই স্থানে বিভাগীয় আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটির সভায় যোগদান করবেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এখানে নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্নের জন্য নানা দিক-নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, কেসিসি নির্বাচনে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে অস্ত্রসহ ২২ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর লোক থাকবে এবং গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্রে ২৪ জন থাকবেন। এ ছাড়াও ৩১টি ওয়ার্ডে ৩১টি পুলিশের টিম এবং ১০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। র‌্যাবের ৩২টি টিম (প্রতি পাঁচটি কেন্দ্র মিলে) টহলে থাকবে। বিজিবি থাকবে ১৬ প্লাটুন। কোথাও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে তা মোকাবিলা করার জন্য তিন থেকে চার প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ থাকবে। ৬০ জন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন এবং প্রত্যেকটি বিজিবি টহলের সাথে একজন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ১০ জন, যারা তাৎক্ষণিকভাবে বিচার করতে পারবেন।

এদিকে সিটি করপোরেশনে প্রথমবারের মতো মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত তালুকদার আব্দুল খালেক (নৌকা), বিএনপি মনোনীত নজরুল ইসলাম মঞ্জু (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত শফিকুর রহমান মুশফিক (লাঙল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক (হাত পাখা) ও সিপিবি মনোনীত মো. মিজানুর রহমান বাবু (কাস্তে)। এবার নগরীর ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১৪৮ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

উল্লেখ্য, খুলনা সিটিতে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ ও নারী ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন। ভোটকক্ষ ১ হাজার ১৭৮টি। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ৪ হাজার ৯৭২ জন। এ নির্বাচনে ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ভোট কক্ষ রয়েছে ১ হাজার ৫৬১টি। আর অস্থায়ী ভোট কক্ষ ৫৫টি। সর্বশেষ ২০১৩ সালে কেসিসির নির্বাচনে নগরীর ৮নং ওয়ার্ডে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হয়।

Comments