তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে

প্রকাশিত: ১০:০১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৮, ২০১৮

একুশ ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শেখ হাসিনা কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের সম্মেলনে যোগদানের জন্য বর্তমানে লন্ডনে এক সেমিনারে প্রশ্নোত্তরের সময় এ কথা বলেন।

তারেক রহমান সেনাসমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেফতার হবার পর জামিন পেয়ে ২০০৮ সালে তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যান তখন থেকে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন,এখন স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন বলে জানা যায়।

তারেক রহমান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ও মুদ্রাপাচার মামলায় কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন।

খালেদা জিয়া,দুর্নীতির দায়ে জেলে যাওয়ার পর এখন তারেক রহমানই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে আসার পর বাংলাদেশে বিএনপির নেতারা এর তীব্র সমালোচনা করেছেন। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এ বক্তব্য হচ্ছে তার ভাষায় ‘প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার রোডম্যাপ।’

তাকে যদি বিচারের জন্য বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কথা শেখ হাসিনার সরকার ভেবে থাকে – তাহলে দুই দেশের বর্তমান আইনী কাঠামোতে কি আসলে কাউকে এভাবে ফেরত পাঠানো সম্ভব?

এ ব্যাপারে ব্রিটেনের আইনে কি বলা হয়েছে – বিবিসি বাংলার কাছে তা ব্যাখ্যা করেছেন ইংল্যান্ডে সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী সৈয়দ ইকবাল ।

“তারেক রহমান সফলভাবে ব্রিটেনে আশ্রয় এবং স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন। তিনি প্রমাণ করতে পেরেছেন যে বাংলাদেশে ফেরত গেলে তার ওপর জুলুম হবে রাজনৈতিক কারণে”

ইকবাল জানান, তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন সেটা হলো এক্সট্রাডিশন বা বিচারের জন্য প্রত্যর্পণ।

“এর প্রক্রিয়া হলো যদি কোন সরকার ব্রিটিশ হোম অফিস বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক্সট্রাডিশনের আবেদন পাঠায় তাহলে ব্রিটেনের ২০০৩ সালের এক্সট্রাডিশন আইন আলোকে করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এক্ষেত্রে গ্রেফতারের পরোয়ানা দেয়া হবে আদালতের মাধ্যমে।”

“আদালত দেখবে যে এ ক্ষেত্রে কোন আইনী বাধা আছে কিনা। এর একটি হলো – যে অপরাধের জন্য তাকে বাংলাদেশে নেয়া হবে তার জন্য তার মৃত্যুদন্ড হতে পারে কিনা। ”

“দ্বিতীয়টি হলো যে সাজার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হবে – তার বাইরে অন্য কোন সাজা যেন না হয়। তৃতীয়টি হলো এক্সট্রাডিশন অর্থাৎ বিচারের জন্য প্রত্যর্পিত হবার মতো কোন অপরাধ তিনি করেছেন কিনা।”

তারেক রহমান বা তার আইনজীবীরা যদি এটি চ্যালেঞ্জ করতে চান তাহলে তারা আপিলের প্রক্রিয়ায় শরিক হতে পারেন, হাইকোর্টে বা সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারবেন বলে ইকবাল বলেন।

“তা ছাড়াও তারা যদি মনে করেন যে এতে মানবাধিকারের লংঘন হচ্ছে, বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলকভাবে তাকে নেয়া হচ্ছে, তাহলে তারা জুডিশিয়াল রিভিউর মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। তারা বলতে পারবেন যে যে কনভেনশনের আওতায় তাকে ব্রিটেনে আশ্রয় দেয়া হয়েছে – দেশে ফিরিয়ে নিয়ে গেলে তার লংঘন হবে – তারা তা করতে পারবেন।”

ইকবাল জানান, ২০০৩ সালের এক্সট্রাডিশন আইন, এবং ২০০২ সালের কমনওয়েলথ দেশগুলোর এক্সট্রাডিশন সংক্রান্ত আইনগুলোতে এ প্রক্রিয়াগুলো পরিষ্কারভাবে বলা আছে।

Comments