জেলেই যেতে হলো বলিউডের ভাইজান খ্যাত সালমান খানকে

প্রকাশিত: ৭:৫৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০১৮

নিউজ ডেস্ক : কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার দায়ে ৫ বছর জেল, ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলিউডের ভাজানখ্যাত সালমান খানকে। ৫ বছরের জেল হওয়ায় জামিনের জন্য সেশনস কোর্টে যেতে হবে সালমানকে। ৩ বছরের কম সাজা হলে যোধপুর আদালতই বৃহস্পতিবার তাকে জামিন দিতে পারত। কিন্তু সেটির সুযোগ না থাকায় সালমানকে পুলিশের গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যোধপুর সেন্ট্রাল জেলে।

আজ বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পরই যোধপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় সালমানকে। তাঁর আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আজ রাতটা কারাগারেই কাটাতে হচ্ছে তাঁকে।


আজ রাত জেলেই থাকছেন ‘সাল্লু ভাই’

এনডিটিভি জানিয়েছে, আগামীকাল শুক্রবার সালমানের জামিনের শুনানি হবে। প্রায় কুড়ি বছর পর আজ যোধপুর আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করলেন।

১৯৯৮ সালে সালমান, সাইফ, টাবু, নীলম ও সোনালি বেন্দ্রে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শুটিংয়ে যোধপুর গিয়েছিলেন। অভিযোগ করা হয়, শুটিং চলাকালীন ১ ও ২ অক্টোবর রাতে দুই জায়গায় সালমান কৃষ্ণসার শিকার করেন। ওই সময় বিশনয় সম্প্রদায়ের মানুষ কাঙ্কানি গ্রাম থেকে সেই হরিণ শিকারের গুলির শব্দ শুনতে পান। এমনকি সালমানকে জিপসি নিয়ে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে যেতেও দেখেন তাঁরা। সালমানের খানের বিরুদ্ধে কাঙ্কানি গ্রামের বাসিন্দারাই মূল অভিযোগ তোলেন।

ভারতের রাজস্থানের যোধপুরের আদালতে যখন সালমান খানের সাজা হয়, আদালতের বাইরে সেসময় উল্লাস করে মিষ্টি বিতরণ করেছে রাজস্থানের ‘বিশনয়’ সম্প্রদায়ের মানুষ। ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে এই সম্প্রদায়ের মানুষই সালমান খান সহ একটি শুটিং ইউনিটের আরো কজনের বিরুদ্ধে দুটি কৃষ্ণ হরিণ – যা চিংকার নামেও পরিচিত – হত্যার অভিযোগে মামলা করে।

চিংকার হরিণ ভারতে সংরক্ষিত প্রাণীর তালিকায়। সে কারণে, সাথে সাথেই সালমানকে তখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যদিও ১০ দিন পর তিনি জামিনে ছাড়া পান। ২০ বছর পর বৃহস্পতিবার সেই মামলায় তার পাঁচ বছর সাজা হলো। এর মাঝে ফুটপাতে গাড়ি উঠিয়ে মানুষ হত্যার মামলায় তিনি রেহাই পেয়েছেন। কিন্তু দুটি হরিণ শিকারের মামলা তাকে ছাড়েনি। তার প্রধান কারণ হলো বিশনয় সম্প্রদায় এই মামলার পেছনে ক্রমাগত লেগে ছিল।


চিংকার রাজস্থানের বিশনয় সম্প্রদায়ের কাছে পবিত্র বন্যপ্রাণী

ভগবান বিষ্ণুর পূজারি বিশনয় সম্প্রদায় কয়েকশ বছর ধরে ২৯টি রীতি অক্ষরে অক্ষরে মানার চেষ্টা করে। আর সেই সব রীতির মোদ্দা কথা – প্রকৃতির সুরক্ষা, বৃক্ষ রক্ষা, জঙ্গলের প্রাণী রক্ষা। বিশেষ করে চিংকার হরিণকে বিশনয় সম্প্রদায় পবিত্র হিসাবে গণ্য করে। এই হরিণকে তারা বলতে গেলে পুজো করে। প্রাচীন হিন্দু পুরানের এই কৃষ্ণ হরিণের উল্লেখ রয়েছে যে এরা ভগবান কৃষ্ণের রথ টানতো। চিংকারকে মানা হয় বাতাস এবং চাঁদের বাহন হিসাবেও।

বিশ্বাস এবং ভক্তির কারণেই প্রভাবশালী বিশনয় সম্প্রদায় ২০ বছরেও এই মামলা নিয়ে হাল ছাড়েনি। সাথে ছিল প্রাণী ও পরিবেশ সংরক্ষণের আন্দোলনকারীদের সাহায্য।

তবে মামলায় অন্য ৪ অভিযুক্ত সাইফ আলি খান, তব্বু, নীলম ও সোনালি বেন্দ্রেকে বেকসুর খালাস দিয়েছে যোধপুর আদালত। বিশনয়রা বাকি অভিযুক্তদের খালাস পাওয়ার রায়কে চ্যালেঞ্জ করবে বলে জানিয়েছে।

একটি সূত্রের খবর, সালমানের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া রায় ও সাজার নির্দেশের বিরুদ্ধে দায়রা আদালতে জামিনের আবেদন পেশ করা হয়েছে। আগামীকাল বেলা সাড়ে দশটায় তার শুনানি। ফলে আজকের রাতটা সালমানকে কাটাতে হবে জেলেই।

/এসআর

Comments