খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ তথ্যটি সঠিক নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০১৮

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, তথ্যটি সঠিক নয়। তাঁর জন্য যা যা করা দরকার তাই করা হয়েছে। জেলকোড অনুযায়ী যদি আরও কোনো ব্যবস্থা নেয়ার থাকে তা গ্রহণ করা হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনার বাইরে তিনি অন্য কোথাও চিকিৎসা নিতে চাইলে সে ব্যবস্থা করা কঠিন।

মঙ্গলবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার আগের অসুস্থতার চিকিৎসা চলছে। তিনি নতুন কোনো অসুস্থতায় ভুগছেন না। সুতরাং তিনি গুরুতর অসুস্থ পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের সে অভিযোগ সঠিক নয়। তাকে বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। তিনি আর সেখানে যাবেন না। পরে আমরা সিএমএইচে নেয়ার কথা বলেছি, তিনি সেখানেও যাবেন না।

অপরদিকে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যা ও গুম’ সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, দেশে কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যা ও গুমের ঘটনা ঘটছে না। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে অথবা দুটি মনের মিলনে উড়াল দিচ্ছে, আর বলা হচ্ছে গুম। এমন গুম হওয়াদের বের করবেন কী করে? অধিকাংশ গুমই এ রকম।

মাদকের গডফাদারদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহ করে শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর মাদকের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের খবর হচ্ছে, তাদের ডিপার্টমেন্টাল অ্যাকশন (বিভাগীয় পদক্ষেপ) শুরু হয়ে গিয়েছে। তাদের সাসপেন্ড হচ্ছে। তাদের দু-একজন কারাগারে অন্তরীণ হয়ে গিয়েছে।

মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা বা মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকায় দুই শতাধিক মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? – এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে পুলিশের যেসব সদস্যের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। প্রমাণের ভিত্তিতে সাসপেন্ড হচ্ছেন। ইতোমধ্যে ২/৩ জনকে কারান্তরীণ করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, সংসদ সদস্যও অপরাধ করলে পার পাচ্ছেন না। দেশের আইন অনুযায়ী বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। সেখানে পুলিশ সদস্যরাও বাদ যাবেন না। তবে কোনো নির্দোষ ব্যক্তি যাতে সাজা না পান সে জন্য সময় লাগছে। বিভাগীয় তদন্তও চলছে। তদন্তে মাদকে জড়িত থাকার বিষয় প্রমাণ মিললে ছাড় দেয়া হবে না।

‘বন্দুকযুদ্ধে’ টেকনাফের ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরাম নিহত হওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একরামের পরিবারের সঙ্গে দেখা ও কথা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। আর র‌্যাব সদস্যদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি তদন্তের অংশ। তদন্তে যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হয় তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট করে বিদেশ চলে যাচ্ছে- এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ পুরান। তবে নজরদারি রাখা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে কারও কাছে পাসপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গারা যাতে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীর শিকার না হয় সে জন্য চেষ্টা চলছে। ভারতসহ সবাই এ ব্যাপারে সোচ্চার।

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে গতবছর জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া পাঁচ দফা প্রস্তাবের কথা মনে করিয়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় বলে আসছি, রাখাইনে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে। সেগুলোর আলোকে যদি রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করা না যায়, তাহলে হয়ত তারা যাবে না।

Comments