কিশোরগঞ্জে তাবলীগের ওয়াজাহাতি জোড়ে লাখো মানুষের ঢল

প্রকাশিত: ১০:৩৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০১৮

আশরাফ আলী সোহান, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জেলাখো মানুষের ঢল নেমেছে বুধবার দাওয়াতে তাবলীগের ওয়াজাহাতি জোড়ে।

জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ওয়াজাহাতি জোড়ে দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরামগণ ও দাওয়াতে তাবলীগের মুরুব্বীগণ বয়ান করেন।

তাবলিগ জামাতের চলমান সঙ্কটকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের কাছে প্রকৃত বিষয় ও ওলামায়ে কেরামের অবস্থান তুলে ধরতে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-থানা-ইউনিয়ন পর্যায়ে তাবলীগের সাথীদেরকে সঠিক দিক নির্দেশনা দেবার উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকদিন যাবৎ সারা বাংলাদেশে ওয়াজাহাতি জোড় চলছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার কিশোরগঞ্জ জেলায় এই ওয়াজাহাতি জোড় অনুষ্ঠিত হয়। শহরের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত আজিমুদ্দিন হাই স্কুল মাঠে সকাল থেকেই লোকজন আসতে থাকে। কানায় কানায় ভরে ওঠে মাঠ।

দুপুর ১টা পর্যন্ত ওয়াজাহাতি জোড় চলে। কিশোরগঞ্জ ইমাম-ওলামা পরিষদের সভাপতি, আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মহা পরিচালক আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ সাহেবের সভাপতিত্বে বয়ান করেন মারকাজুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার শিক্ষাসচিব ও বিভাগীয় তাখাসসুস ফী উলুমিল হাদীস এর প্রধান আল্লামাা আব্দুল মালেক, কাকরাইল মুরুব্বী বাংলাদেশ আলমি শুরা মাওলানা জুবায়ের, মুফতি কেফায়াতুল্লাহ আল আজহারী, মাওলানা রবিউল হক, মাওলানা আব্দুল বারী, মাওলানা আব্দুল মতিন, আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, কিশোরগঞ্জ মারকাজ মসজিদের মোতাওয়াল্লী মাজহারুল ইসলাম ভূইয়া সহ অন্যন্য ওলামায়ে কেরামগণ।

বয়ানে ওলামায়ে কেরামগণ বলেণ, এই মোবারক জামাত শুধুমাত্র আল্লাহ্ তায়ালা ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পথে মানুষকে আহ্বান করে ঈমান ও আমলের দিকে ডাকে। কিন্তু ইদানিং কোন সাদের কোরআন ও হাদীসের মনগড়া অপব্যাখ্যা ও এই জামাতকে কুক্ষিগত করে রাখার অপপ্রয়াসে সারা পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।

বয়ানে বলা হয় দু-একজন ব্যক্তির হঠকারিতা ও ভ্রান্ত মতাদর্শের ফলে বিশ্ব তাবলীগ এখন হুমকির মুখে। দিল্লির সাআদ সাহেবের বাড়াবাড়ি ও ভুল মতবাদ বিশ্বব্যাপী তাবলীগকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তার বয়ান দেশের তাবলীগ ও আলেম সমাজকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর এক ক্ষতিকর চ্যালেঞ্জ ছাড়া আর কিছু নয়। বিশ্ব তাবলীগের মুরুব্বিদের সাথে সমঝোতায় না এসে সাআদ সাহেব যে ভুল করছেন তার ফলে তাবলীগের কাজ নষ্ট হলে তিনি ও বাংলাদেশে তার অন্ধ সমর্থকরা দায়ী থাকবেন।

বক্তারা বলেন, ওলামায়েকেরাম ৩টি মৌলিক কারণে একমত হয়েছেন ,ক) কুরআন হাদীসের মনগড়া ব্যাখ্যা খ) তাবলীগের গুরুত্ব বুঝতে গিয়ে তাবলীগ ব্যতীত দ্বীনের অন্যান্য মেহনতকে যথা: দ্বীনি শিক্ষা ও তাসাউফ ইত্যাদিকে হেয় প্রতিপন্ন করা, গ) পূর্ববর্তী তিন হযরতজ্বীর উসূল ও কর্মপন্থা থেকে সরে যাওয়ার কারণে বর্তমানে মাওলানা সা’দ সাহেবকে অনুসরণ করা সম্পূর্ণভাবে বর্জনীয় ও নিষিদ্ধ।

বর্তমানে পরিস্থিতিতে কিশোরগঞ্জ জেলার কোনো জামাত বা ব্যক্তিকে নিযামুদ্দীনে পাঠানো বা যাওয়া মুনাসিব হবে না। অনুরূপভাবে নিযামুদ্দীন থেকে আগত কোনো জামাতকে অত্র জেলায়/থানায়/ ইউনিয়নে কাজ করার সুযোগ দেওয়া যাবে না।

মাওলানা সা’দ সাহেব হযরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ. এর রেখে যাওয়া শুরায়ী নেযামকে উপেক্ষা করে নিজেই নিজেকে আমীর দাবী করেছেন, যা শরীয়ত বিরোধী, তাই তার ও তার অনুসারীদের কোনো সিদ্ধান্ত বা ফয়সালা কিশোরগঞ্জ জেলায় বাস্তবায়ন করা যাবে না।

কিশোরগঞ্জের ১৩ থানার দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীগণ, ধর্মপ্রাণ মুসলিম এবং উলামায়ে কেরাম, মাদরাসার ছাত্ররাসহ লাখো মানুষ এতে অংশ নেন।

/আরএ

Comments