‘এখানে বাবরের কেউ নেই’ বলে ফোন কেটে দিলেন

প্রকাশিত: ১১:২০ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০১৮

একুশ ডেস্ক: রাজনীতির মাঠে একসময়কার প্রভাবশালী নেতা বাবর। গতকাল ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা’ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের মৃত্যুদণ্ডের রায় হলেও তার নিজ উপজেলায় তার দলের নেতাকর্মীদের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। নেত্রকোনার মদন উপজেলার ‘বাড়িভাদেরায়’ বাবরের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। বর্তমানে তার বাড়িটি খালি রয়েছে।

এদিকে, নেত্রকোনা সদরসহ মদন উপজেলায় রায়ের পর বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে মাঠে নামতে দেখা যায়নি। সেই সঙ্গে পাওয়া যায়নি কোনো প্রতিক্রিয়াও। বাড়িতে গিয়ে বাবরের পরিবারের আত্মীয়-স্বজন কিংবা দলের কাউকে পাওয়া যায়নি।

মদন উপজেলা বিএনপি সভাপতি এন আলম বলেন, আগে কেন্দ্র প্রতিক্রিয়া দেখাক। আমরা আলোচনা করছি। আলোচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত নেব। কেন্দ্র থেকে যে কর্মসূচি দেয়া হবে আমরা তাই পালন করব।

রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া জানতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক আনোয়ারুল হকের মুঠোফোনে বারবার কল দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সভাপতি আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, আমি এখন সমস্যায় আছি। এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না। এখানে বাবরের কেউ নেই বলে ফোন রেখে দেন তিনি।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার খান এখলাছ বলেন, এ রায়ে বাংলাদেশ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। তবে তারেক জিয়ার মৃত্যুদণ্ড হলে আরও খুশি হতাম।

মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কদ্দুছ বলেণ, রায়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। যে রায় বন্ধ করে দিয়েছিল সে রায় পুনরায় শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

রায়ের পর নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায় বলেন, এ রায়ে ঘটনার মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমানকে ফাঁসি না দেয়ায় দেশবাসী ক্ষুব্ধ, হতাশ। অবশ্যই আপিলের মাধ্যমে তারেক রহমানের ফাঁসির দণ্ড দিতে হবে। সেইসঙ্গে দণ্ডিত প্রত্যেকের সাজা কার্যকর করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে।

নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আশরাফ আলী খসরু বলেন, গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিঃশেষ করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। দলীয় প্রধানসহ নেতাকর্মীদের হত্যার নীলনকশা করা হয়েছিল। অনেক হতাহত হয়েছে, ঘটনার মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমানকে সর্বোচ্চ সাজা দিতে হবে। সেইসঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেকের দণ্ড অবলম্বে কার্যকর করতে হবে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের মৃত্যুদণ্ড হওয়ার পরও তার নিজ উপজেলা মদনে বুধবার রায়ের বিরুদ্ধে কোনো বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করতে দেখা যায়নি বিএনপিকে।

মদন থানা পুলিশের ওসি মো. রমিজুল হক বলেন, মদন উপজেলার সবকটি পয়েন্টে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাবরের বাড়ি ‘বাড়িভাদেরায়’ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীবিরোধী সমাবেশে নৃশংস গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে।

বুধবার এ মামলার রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আদালত।

পাশাপাশি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। সেই সঙ্গে এ মামলার আসামি ১১ সরকারি কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

বিআইজে/

Comments