এখনো গ্রেনেড হামলার স্প্রিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন ভৈরবের নাজিম উদ্দিন

প্রকাশিত: ১০:৫৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১০, ২০১৮

মো.আফসার হোসেন তূর্জা, ভৈরব প্রতিনিধি: দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের বিচার শেষ হয়নি।

ভয়াবহ সেই গ্রেনেড হামলায় আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী ভৈরবের নাজিম উদ্দিন সারা শরীরে অসংখ্য স্প্রিন্টারে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে এখনো বেঁচে আছেন। কিন্তু সেই দিনের সেই দুঃসহ স্মৃতি আজো তাকে তাড়া করে বেড়ায়। ফলে রাতে ঘুম আসে না দু’চোখে।

জানা যায়, ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট নারীনেত্রী ও আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শহীদ বেগম আইভি রহমানের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন ভৈরবের আকবরনগর গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিন। বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী জনসভায় যোগ দিয়ে ছিলেন।

আইভি আপা পানি খাবেন। তাই, পানি কিনতে দোকানের উদ্যেশ্যে পা বাড়াতেই গ্রেনেডে বিকট শব্দে স্তব্দ নাজিমের কান। চারদিকে শুধু ধোঁয়া। মুহুর্তেই আরও দু’একটি শব্দের পর আর কিছুই জানেন না তিনি…।

ঘাতকদের গ্রেনেড হামলায় সেদিন গুরুতর আহত হন নাজিম উদ্দিন। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ভেবে লাশের সাথে ফেলে দিয়েছিলো। পরে হঠাৎ জ্ঞান ফিরে তার। তাৎক্ষণিক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেনাল হাসপাতালে নেওয়া হয়।

অবস্থার অবনতি হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ভারতে চিকিৎসার জন্য পাঠান। সেখানে দীর্ঘ দিন চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসেন। তার বুকে ও পায়ে ৪টি মেজর অপারেশন করা হয়েছে। এতেও পুরোপুরি সুস্থ বা চলাফেরায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না পাওয়ায় কর্ম ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেন তিনি।

বর্তমানে তার বুকে ও দুই পায়ে অসংখ্য স্প্রিন্টার রয়েছে। দ্রুত এগুলো অপসারণ করা খুবই প্রয়োজন। স্প্রিন্টারের যন্ত্রণায় দিন শেষে রাতে দু’চোখে ঘুম আাসে না তার। এছাড়াও শীত এলে দেহে স্প্রিন্টারের কারণে অসহ্য যন্ত্রণার মাত্রা আরো বাড়ে। আবার গরমে রোদে যেতে পারেন না তিনি। সামান্য চুলকানিতে শরীর দিয়ে রক্ত ঝরে।

এ জন্য তার এখনো চিকিৎসার প্রয়োজন। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে না পারায় দুঃসহ যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন নাজমুল হাসান ওরফে নাজিম উদ্দিন। তাই, নাজিম উদ্দিনের সু-চিকিৎসার দাবী জানান এলাকাবাসী।

২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী নাজিম উদ্দিন জানায়, ঘাতকদের গ্রেনেড হামলায় ইতিমধ্যে অনেকে মারা গেছেন। অনেকে আবার আহত অবস্থায় মৃত্যু যন্ত্রণা নিয়ে বেচেঁ আছেন। যারা বেচেঁ আছেন তারা অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না। এভাবে তিলে তিলে নিঃশ্বেষ হয়ে যাচ্ছেন তারা।

তাই, আহতদের পূর্ণ চিকিৎসা ও পূর্ণবাসনসহ গ্রেনেড হামলা জড়িতদের দ্রুত বিচার আইনে ফাসি কার্যকর করবে সরকার। মরার আগে দেখে যেতে চান তিনি।

/আরএ

Comments